২৫ বছর পর নিজ হাতে খেলেন মিশরের ইমান
---
নিউজ ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ওজনের নারী খ্যাত মিশরের ইমান আহমেদ ২৫ বছর পর নিজ হাতে খাবার খেয়েছেন। আবুধাবির বুর্জিল হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন ইমান। ধীরে ধীরে তার গলার স্বরও পরিষ্কার হচ্ছে। এজন্য স্পিচ থেরাপিস্টের সাহায্য নিচ্ছেন ইমান।
মাত্র কয়েক মাস আগেও তিনিই ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ওজনের মানুষ। মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই তার ওজন ছিল ৫০৪ কেজি। অস্ত্রোপচারের জন্য সুদূর মিশর থেকে উড়ে এসেছিলেন মুম্বাইয়ে। অনেক রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি, হাঁটতেও, খেতে এমনকী কথাও বলতে পারতেন না। নিজের হাত-পা নাড়াচাড়াও করতে পারতেন না। মালবাহী বিমানে চড়িয়ে মুম্বাই আনা হয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে স্থূলকায়া, ইমান আহমেদকে।
ভারতের বাণিজ্যনগরী মুম্বাইয়ের সাইফি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ও টানা তিন মাসের চিকিৎসার পর ইমান যান আবুধাবির উদ্দেশে। তখন তার ওজন ১৭৬.৬ কেজি। সেখানে বুর্জিল হাসপাতালে চলছে তার পরবর্তী পর্যায়ের চিকিৎসা।
দুই বছর আগে একবার স্ট্রোক হওয়ার পর ইমানের শরীরের নিম্নাংশ সম্পূর্ণ ভাবে অসাড় হয়ে গিয়েছিল। বুর্জিল হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার ইয়াসিন ইল-শাহাত জানান, এখন ধীরে ধীরে শরীরের নিম্নাংশ নাড়াতেও পারছেন ইমান। তার মানসিক অবস্থারও দ্রুত উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বুর্জিল হাসপাতালে ইমানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসক নেহাদ হালায়া জানিয়েছেন, মাত্র ১১ বছর বয়সে স্ট্রোক হওয়ার ফলে ডান দিকটা প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছিল ইমানের। সম্প্রতি ডান হাত স্বাভাবিক উচ্চতা পর্যন্ত ওঠাতে পারছেন ইমান। কোনও সাপোর্ট ছাড়াই বসেও থাকতে পারছেন ১০-১৫ মিনিট। এত দিন ‘টিউব ফিডের’ সাহায্যে খেলেও এখন আস্তে আস্তে খেতেও শুরু করেছেন তিনি। সারা দিনে দুইবার তাকে ১৫ চামচ করে খাবার খাওয়ানো হয়।
নেহাদ জানান, এখন ইমানকে কড়া ডায়েটে রাখা হয়। তাকে লো-ক্যালরি খাবার দেওয়া হয়। ২০ জন স্পেশালিস্ট সব সময় নজর রাখেন ইমানের উপর। একাধিক ডায়েটেশিয়ান তার ডায়েট চার্ট বানানোর দায়িত্বে রয়েছেন।
সম্প্রতি ইমানের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করতে ইলেকট্রোইনসেফালোগ্রাম করা হয়েছে। সেই পরীক্ষার ফলাফলে যথেষ্ট আশাবাদী বুর্জিল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তারা জানান, আরও উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে ইমানের।