‘আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তান কিন্তু হারেনি’
---
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :কুলভূষণ যাদবের ফাঁসিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত। কিন্তু তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রতিনিধি দলকে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এমনটাই জানালেন পাক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশনীতি বিষয়ক মুখ্য উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ। পাশাপাশি জানালেন, ভারত আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তানকে হারানোর যে দাবি করছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ এখনও চূড়ান্ত রায় দেওয়া বাকি রয়েছে।
আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের রায় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সরতাজ আজিজ বলেন, ‘কেউ যদি বলে আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তান হেরে গিয়েছে, তাহলে সেটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। যাদবের ফাঁসিতে স্থগিতাদেশ দিলেও ভারতের প্রতিনিধি দলকে দেখা করার অনুমতি দেয়নি আদালত।’ তিনি আরও অভিযোগ তোলেন কম সময়ে রায়দানের জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গিয়েছে। পরবর্তী সময়ে আরও শক্তিশালী আইনি দল পাঠানো হবে। এর সঙ্গেই সরতাজ আজিজ আরও যোগ করেন, আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত কখনই যাদবের ফাঁসি রদ করতে পারে না। তিনি বলেন ‘যাদব স্বীকার করেছে, তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালানোর। যাদব একজন প্রাক্তন নৌসেনা অফিসার এবং ওর কাছে নকল পাসপোর্ট ছিল। দেশের আইন অনুযায়ী যাদবকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে।’
কিন্তু কুলভূষণ যাদবের মামলায় কেন আন্তর্জাতিক আদালতে গেল পাকিস্তান? এই প্রশ্নের উত্তরে সরতাজ আজিজ বলেন, ‘পাকিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জের এক সদস্য। আলোচনার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ এরপরেই আজিজ দাবি করেন, আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে ভারত নিজেই ভুল করেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যুকে তুলে ধরতে পাকিস্তানের পথ আরও প্রশস্ত হল। এদিকে, কুলভূষণের ফাঁসির সাজা মকুবের জন্য তাঁর মা আবেদন জানিয়েছে পাক সরকারের কাছে। এদিন সেটাও জানিয়েছেন সরতাজ আজিজ। যদিও আজিজের এই মন্তব্যের জন্য কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারত। তবে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, চর সন্দেহে আটক করা হয় কুলভূষণ যাদবকে৷ তিনি ভারতীয় নৌ-সেনায় কর্মরত ছিলেন৷ অবসরগ্রহণের পর ইরানে ব্যবসা করতেন৷ বৈধ পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও ভারতের গুপ্তচর সংস্থা র-র এজেন্ট সন্দেহে কুলভূষণকে আটক করা হয়৷ গত ১০ এপ্রিল ভারতীয় নৌসেনার এই প্রাক্তন অফিসারকে গুপ্তচরের তকমা দিয়ে কার্যত বিনা বিচারে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় পাকিস্তানের সামরিক আদালত৷ এ বিষযে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারত৷ ভারত অন্তত ১৬ বার ইসলামাবাদের কুলভূষণের কনস্যুলার অ্যাকসেস চায়৷ কিন্তু প্রতিবারই আবেদন ফিরিয়ে দেয় পাকিস্তান৷ শেষপর্যন্ত 8 মে এই ইস্যুতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয় ভারত৷ দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পর পাকিস্তান কার্যত তুলোধোনা করে কুলভূষণের ফাঁসির নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করে আন্তর্জাতিক আদালত৷ নয়াদিল্লিকে স্বস্তি দিয়ে বিচারপতি রনি আব্রাহাম জানিয়ে ছিলেন, এই মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে না হওয়া পর্যন্ত প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা অফিসার কুলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারবে না পাকিস্তান৷ পাশাপাশি, ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে যাদবের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক আদালত৷