যে কারণে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে কোহলিরা
স্পোর্টস ডেস্ক :এবারের আইপিএলে দুর্দিন যাচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর। ক্রিকেট বিশ্বের সেরা তারকা ক্রিস গেইল, ডিভিলিয়ার্স ও বিরাট কোহলিরা থাকার পরও ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না দলটি। আট ম্যাচ খেলে মাত্র ২টিতে জিতে ৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ছয়ে আছে তারকাবহুল এ দলটি। আজ রাতে আবার গুজরাট লায়নস’র বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা।
দলটিকে নিয়ে ভারতের ক্রিকেট কিংবদন্তি রবি শাস্ত্রি একটা বিশ্লেষণ করেছেন, তা তুলে ধরা হলো-
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু-কে ঘিরে যেন এক গ্রিক ট্র্যাজেডি রচনা হচ্ছে। কখনও চোট, কখনও খারাপ ফর্ম। আর এ দু’টোর কোনওটাই না হলে প্রকৃতির রোষ। সব কিছুর ধাক্কায় আরসিবি এখন খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে। যেন একটা অভিশাপ নেমে এসেছে ক্রিকেটের ‘সুপারম্যান’দের ওপর।
ওরা প্রথমে খেলতে নামল বিরাট কোহলি এবং এ বি ডিভিলিয়ার্স-কে ছাড়া। এ যেন বর ছাড়া বরযাত্রী। ব্যান্ডপার্টি এসে বাজনা বাজাল, গান হল, নাচ হল। কিন্তু অনুষ্ঠানটাই হল না। বরং ওদের দরজা দেখিয়ে বাইরে বার করে দেওয়া হল চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার মধ্যে।
এর পর ডিভিলিয়ার্স টিমে ফিরল। তার পর কোহলি। ওরা ছন্দে থাকলেও ক্রিস গেল এবং শেন ওয়াটসন অনেক দিন ঘুমিয়ে থাকল। কেদার যাদবের ওপর দায়িত্ব পড়ল ঘর সামলানোর। যখন ওকে ব্যবহার করা যেত বিপক্ষ শিবিরে আক্রমণ করার জন্য। আরসিবি-কে দেখে মনে হচ্ছিল, যেন ভিক্ষাপাত্র হাতে রানের খোঁজে নেমেছে।
তার পরে ঝড় উঠল। ক্রিস গেল বিধ্বংসী হয়ে উঠল। রানে ফিরল কোহালিও। প্রথম উইকেটে একশোর ওপর রান। ২০ ওভারে দু’শোর বেশি রান। গুজরাত লায়ন্স বড় ব্যবধানে হারল। কিন্তু বোঝা যায়নি এটা ফাঁকা আওয়াজ ছিল। পরের ম্যাচেই ওদের ৫০ রানের কমে আউট করে দিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আরসিবি-র একটা ব্যাটসম্যানও দু’অঙ্কের রান করেনি ওই ম্যাচে।
এটা অভিশাপ ছাড়া আর কী! না হলে আলো ছাড়া সূর্য, সঙ্গীত ছাড়া নাইটিঙ্গল, গর্জনহীন সিংহ বা হাওয়া ছাড়া ঝড় কি ভাবা যায়? আরসিবি-র ব্যাটিং লাইন তো স্বপ্নের। সেই টিম কি না সামান্য স্কোরও তাড়া করতে পারছে না। আর এখন তো বৃষ্টি এসে ওদের প্রায় ছিটকে দিল টুর্নামেন্ট থেকে। বহু ব্যবহৃত কথাটা আবার বলা যায়— সুতোয় ঝুলছে কোহালিদের ভাগ্য।
বেঙ্গালুরু-কে যদি বিদায় নিতেই হয়, তা হলে ওরা যেন লড়াই করে বিদায় নেয়। যাতে ওরা ওদের ভক্তদের ভালবাসার মর্যাদা অন্তত দিতে পারে। এ বারের আইপিএলটা আরসিবি-র ব্যাটিং বিস্ফোরণের অভাবে কিছুটা জৌলুস হারিয়েছে। ওদের হাতে হাফ ডজন মতো ম্যাচ আছে। এই ক’টা ম্যাচে যেন ওরা অন্তত সুনাম রক্ষার জন্য খেলে। সময় এসেছে সমর্থকদের বিশ্বাসের মর্যাদা দেওয়ার।