উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধের হুঙ্কার, ট্রাম্প গেলেন অবকাশে
উত্তর কোরিয়া যখন রণহুঙ্কার দিচ্ছে তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ফ্লোরিডায় তার রিসোর্ট মার-আ-লাগো’তে ফের অবকাশ যাপনে গেলেন। রুটিন মাফিক উচ্চপদের সহকারিরা এবার ট্রাম্পের সঙ্গে যাননি, যদিও সারাবিশ্বে পারমাণবিক যুদ্ধ বেঁধে গেল এমন রব উঠেছে। গত জানুয়ারিতে ক্ষমতা নেওয়ার পর মার-আ-লাগোতে এটি ট্রাম্পের সপ্তম যাত্রা। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার হুঙ্কারে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশটি ষষ্ঠ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করতে যাচ্ছে। তবে বিশ্বে উত্তেজনার মাঝে এই প্রথম ট্রাম্প যে তার সমুদ্রপাড়ের টেরাকোটা ছাদের বাড়িতে অবকাশে গেছেন তা নয়, এবছরই জাপানে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যস্ততম সময় অতিবাহিত করছিলেন তখন উত্তর কোরিয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়। গত সপ্তাহেই মার-আ-লাগো’তে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’এর সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি ট্রাম্প ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘোষণা দেন।
তবে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্মকর্তারা এবার ট্রাম্পের অবকাশে রয়েছেন। সেখানে রয়েছে ভিডিও কনফারেন্সের সুবিধা সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থা। কিন্তু অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা ও উপদেষ্টা, ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ ওয়াশিংটনে ছুটি কাটাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ট্রাম্প এয়ার ফোর্স ওয়ানে যাত্রা করেন। বিমানবন্দর পর্যন্ত ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ রিয়ান্স প্রাইবাস এলেও তিনি ফ্লোরিডা যাননি। যেহেতু ছুটিতে ট্রাম্প রয়েছেন তাই তার সঙ্গে এবার অধিক কর্মকর্তারা যাননি। ইস্টারের ছুটিতে ট্রাম্প তার স্ত্রী ও সন্তানদের যেমন সময় দেবেন তেমনি তার কর্মকর্তারা যাতে সমান সুযোগ পান সেদিকে লক্ষ্য রেখেই এমন শিডিউল করা হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ ফ্লোরিডায় ট্রাম্প অবকাশে থাকলেও উত্তর কোরিয়ার স্থপতির জন্মদিনে ষষ্ঠ পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার আয়োজন চলছে।
এরই মধ্যে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে পারমাণবিক বোমা ‘মোয়াব’এর বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ৩০ ফুটেরও বেশি দীর্ঘ বোমাটি মার্কিন বিমান বাহিনীর স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ড পরিচালনায় এমসি-১৩০ বিমান থেকে ফেলা হয়। এর একদিন পর উত্তর কোরিয়া ডুবোজাহাজ থেকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তবে রাশিয়া বলছে, ‘মোয়াবে’র চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন সাড়ে পনর হাজার পাউন্ড বোমা দেশটির হাতে রয়েছে যার ৪৪ টন টিএনটি’র সমান বিস্ফোরণ ক্ষমতা রয়েছে। মোয়াবের বিস্ফোরণ ক্ষমতা ১১ টন টিএনটির সমান। তবে রাশিয়ার এ বোমাটি অপারমাণবিক।
তবে ট্রাম্প বলেননি যে তিনি মোয়াব পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছেন কি না। ট্রাম্প এটুকু বলছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’এর সঙ্গে আলোচনার পর তিনি অনুধাবন করেছেন, উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে সমস্যা কতটা জটিল। আফগানিস্তানে আইএস জঙ্গিদের নিধন নাকি উত্তর কোরিয়াকে শক্তি প্রদর্শনের জন্যে মোয়াব বোমার পরীক্ষা করা হয়েছে তাও নিশ্চিত নয়।টাম্প বলছেন, উত্তর কোরিয়া একটি সমস্যা এবং এ সমস্যাকে কার্যকরভাবেই মোকাবেলা করা হবে। চীনও সত্যিই এব্যাপারে যথাযথভাবে কাজ করছে বলে জানান ট্রাম্প।
অতীতে দেখা গেছে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ যখন অবকাশে যেতেন তখন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তার সঙ্গে যেতেন। এটি মানসম্মত চর্চা হিসেবেই অনুকরণ করা হত। তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়াও প্রেসিডেন্টকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করার জন্যে এটি রেওয়াজ হিসেবে দেখা হয়।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স রোববার দক্ষিণ কোরিয়ায় আসছেন। এর পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক প্রস্তুতি ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।