মঙ্গলবার, ১১ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৭শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির আওতায় আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে ত্রিপুরায় গেল লৌহ জাতীয় পণ্য॥

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ১, ২০১৭
news-image

---

সন্তোষ সূত্রধর, আশুগঞ্জ থেকে॥ ভারত-বাংলাদেশ ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির আওতায় ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় গিয়েছে ১৫০ মেট্রিকটন লৌহ জাতীয় পন্য। আজ শনিবার সকালে আশুগঞ্জ বন্দর থেকে সড়ক পথে ৬টি ট্রাকে করে ২৫ মেট্রিকটন করে মোট ১শ৫০ মেট্রিকটন লৌহ জাতীয় পন্য ভারতের উদ্যোশে ট্রাক ছেড়ে গেছে। দুপুর ২টার দিকে এসব পন্য আগারতলায় গিয়ে পৌছে। প্রথম দিনে ১৫০ মেট্রিকটন পন্য গেলেও পর্যায়ক্রমে বাকী পন্য জাহাজ থেকে খালাস করে আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে সড়ক পথে যাবে আগরতলায়। এ সব লৌহ জাতীয় পণ্যের মধ্যে রয়েছে জিআই পাইপ, স্টিল সিটসহ অন্যান্য পন্য। এর আগে বুধবার বিকেলে ভারতের কলকাতার ডায়মন্ড হারবার পোর্ট থেকে এমভি নিউটেক নামে একটি জাহাজটি ৮শ ৩৩ দশমিক ৬৪ মেট্রিকটন লোহ জাতীয় পন্য নিয়ে আশুগঞ্জ বন্দরে নোঙ্গর করে। ভারতের কলকাতার ডায়মন্ড হারবার বন্দর থেকে এ সব লৌহ জাতীয় পন্য ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের ৩৫০ কিলোমিটার নৌ-পথ ও ৪৫ কিলোমিটার স্থলপথ ব্যবহার করা হচ্ছে। নৌ প্রটোকল ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির আওয়ায় প্রতি মেট্রিকটন পন্য থেকে বাংলাদেশ সরকার মাসুল পাবে ১শ ৯২টাকা ২২পয়সা করে।
দীর্ঘ আলোচনার পর ভারতের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০১৫ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মাশুল নির্ধারণের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয় গত বছরের নভেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে। ওই বৈঠকে সমঝোতার ভিত্তিতে নৌ ট্রানজিটের আওতায় মাশুল বা ফি নির্ধারণ করা হয় টনপ্রতি ১৯২ টাকা ২২ পয়সা। এর মধ্যে ১৩০ টাকা পাবে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। সড়ক বিভাগকে প্রতি টনে ৫২ টাকা, আর ১০ টাকা পাবে বিআইডব্লিউটিএ। এর আগে আশুগঞ্জ বন্দরকে ‘পোর্ট অব কল’ (ট্রান্সশিপমেন্ট পয়েন্ট) ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। নৌ প্রটোকলের আওতায় কলকাতা-আশুগঞ্জ-আখাউড়া-আগরতলা পথে মাশুল ছাড়াই পরীক্ষামূলক ভাবে ভারত সরকারের বিশেষ অনুরোধে মাশুল বিহীন বাংলাদেশ সরকার মানবিক কারণে অনুমতি দেয়ায় লোহা, ২০হাজার মেট্রিকটন চাল ও ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ নিয়ে যায় ভারতে ত্রিপুরা রাজ্যে। গত বছরের ১৬ জুন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপিসহ দু-দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মাশুল দিয়ে আনুষ্ঠানিক টান্সশিপমেন্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করে।
চাল পরিবহনে বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আনবিস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের স্থানীয় ঠিকাদার বিসিসির পরিচালক জিয়া উদ্দিন খন্দকার জানান, ভারতের কলকাতার ডায়মন্ড হারবার পোর্ট থেকে এ সব লোহ জাতীয় পন্য ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে ৬টি ট্রাকে ১৫০ মেট্রিকটন লৌহ জাতীয় পন্য আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ত্রিপুরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে জিআই পাইপ গুলো সঠিক ভাবে বাধাই না হওয়ায় অনেক বাধাই আবার নতুন করে বাধতে হচ্ছে এতে করে পন্য খালাস করতে সময় লাগছে।
আশুগঞ্জ নদী বন্দরের পরির্দশক মোঃ শাহ-আলম জানান, পন্য পরিবহনের জন্য বিআইডব্লিউটিএ প্রতি মেট্রিক টনে এলএসসি, কার্যবেক্ষন ফি, বার্দিং চার্জ ও পাইলটেজ ফ্রি পাওয়া যাবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভারতের সাথে ট্রান্সসিপমেন্ট চুক্তির আওতায় কাস্টমসের আনুষ্টানিকতা শেষে এসব চাল আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ত্রিপুরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গতঃ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে গৌহাটি ও মেঘালয়ের শিলং হয়ে ত্রিপুরায় যেতে ১৫শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। তাই আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে ৩৫০ কিলোমিটার নৌ-পথ ও ৪৫ কিলোমিটার সড়ক পথে ব্যবহার করে কাভার্ড ব্যানে আখাইড়া স্থল বন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজেন্য পন্য পরিবহন করা হচ্ছে।

এ জাতীয় আরও খবর