মঙ্গলবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ২৫শে মাঘ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

সরাইলে পুকুর নিয়ে চলছে মামলা ব্যাণিজ্য

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৭

সরাইল প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে একটি পুকুর দখলে নিতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য একের এক মামলায় জড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের দেওবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামেরই একটি পুকুরের কিছু অংশে নিজের মালিকানা দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে পুকুরটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তবে পুকুরটির অংশদীদাররা বলছেন, পুকুরে হাবিবুর রহমানের কোনো অংশই নেই। শুধুমাত্র প্রভাব বিস্তার করে পুকুরটি দখলে নেয়ার জন্য একের পর এক মিথ্যা মামলায় তাদেরকে জড়ানো হচ্ছে। সম্প্রতি জোরপূর্বকভাবে ড্রেজার বসিয়ে পুকুরটি বালু দিয়ে ভরাটেরও চেষ্টা করছেন হাবিবুর। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেওবাড়িয়া গ্রামের ২.১৬ একর আয়তনের ওই পুকুরটি ওয়ারিশ সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ-দখলে রয়েছে হানিফ মিয়া, মুসলিম মিয়াসহ অন্যান্য অংশীদারদের। তারা সবাই মিলিতভাবে পুকুরটিতে মাছ চাষ করে থাকেন। পুকুরের মাছ পাহারার জন্য তাদের বেতনভুক্ত একজন পাহারাদাও রয়েছেন।

এ অবস্থায় দেওবাড়িয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান বছর দুয়েক আগে একটি বন্টননামা দলিল দেখিয়ে পুকুরে তার অংশ রয়েছে বলে দাবি করেন। ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর দলিলটি প্রকাশ পেলে এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয় দু’পক্ষের মাঝে। ১৯৮১ সালের দিকে করা ওই দলিলটি বিগত ৩০/৩৫ বছর ধরে গোপন রাখা হয়। হাবিবুরের এই বন্টননামা দলিল বাতিলের জন্যে ২০১৪ সালে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। এর আবেদনে বলা হয়, পুকুরের মালিকানার কম-বেশি অংশ নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে স্থানীয় বাসিন্দা কফিল উদ্দিন ও আবদুল খালেক চালাকি করে একটি বন্টননামা দলিল রেজিস্ট্রি করে রাখেন। কিন্তু এরপর বন্টনামা দলিলটি পক্ষগণ কিংবা ওয়ারিশদের কখনো দেখানো হয়নি। ওই মামলা দায়েরের পর হাবিবুর রহমান পুকুরের ওয়ারিশ হানিফ মিয়া ও মুসলিম মিয়াসহ অন্যান্য অংশীদারদের বিরুদ্ধে পরপর পাঁচটি মামলা দায়ের করেন। পুকুরের অংশীদাররাও হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। দুটি মামলাই আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় গত মাস দেড়েক আগে হাবিবুর রহমান ড্রেজার বসিয়ে পুকুরে বালু ফেলে ভরাট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান পুকুরের অংশীদাররা।

তাদের দাবি, পুকুরটি ভরাট করা হলে পুকুরে থাকা তাদের প্রায় ৩৩ লাখ টাকার মাছ মরে যাবে। এতে করে পথে বসে যাবেন তারা। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন দেওবাড়িয়া গ্রামের ভুক্তভোগীরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, পুকুরের প্রকৃত মালিক হয়েও একের পর এক মামলা দিয়ে তাদেরকে হয়রানি করছেন হাবিবুর রহমান। এর ফলে স্বাভাবিক কাজকর্মও করতে পারছেন না তারা। নতুন করে আবার কোনো মামলায় জড়ানো হবে কি না- সেই আতঙ্কে দিন কাটাছে তাদের।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা নাহিদা হাবিবা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে সরাইল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপক কুমার সাহা বলেন, পুকুরটি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। আদালত যে আদেশ দেবেন আমরা সে অনুযায়ী কাজ করবো।