বাঞ্ছারামপুর-আড়াইহাজার ফেরিঘাট ট্রলারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়
বিশেষ প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ফেরিঘাটে মেঘনা নদী পারাপারে ট্রলার মালিকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে ২০১০ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকা-সিলেট নৌপথের মেঘনা নদীতে কড়িকান্দি-বিষনন্দী ফেরি চালু করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। কড়িকান্দি পন্টুন থেকে বিষনন্দী পন্টুন পর্যন্ত মেঘনার দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। কড়িকান্দি-বিষনন্দী ফেরিঘাট ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর; কুমিল্লার হোমনা, মুরাদনগর উপজেলার মানুষ নিয়মিত চলাচল করছে। এ ছাড়া আড়াআড়িভাবে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় (ট্রলার) নদী পার হতে ৮-১০ মিনিট লাগে। নদী পার করতে জনপ্রতি ভাড়া ১০ টাকা হলেও বেশির ভাগ সময়ই ২০ টাকা হারে আদায় করছেন ট্রলার মালিকেরা। আর যাত্রী পারাপারের কাজ করছে বাঞ্ছারামপুর ও আড়াইহাজারের শতাধিক ইঞ্জিনচালিত নৌকা।
ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কড়িকান্দি ও বিষনন্দী ঘাট থেকে প্রতিটি ট্রলারে ৩০-৪০ জন করে যাত্রী পারাপার করছেন ট্রলারমালিকেরা। প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ২০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
যাত্রী মো.মিলন মিয়া বলেন, ‘আমি সপ্তাহের তিন-চার দিনই ট্রলার দিয়া নদী পার হচ্ছি। কিন্তু প্রতিবারই নদী পার করতে ২০ টাকা করে নিচ্ছেন ট্রলারমালিকেরা। মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বের জন্য জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া আদায়; এটা একেবারে জুলুম। অথচ একই জায়গা থেকে ৮-১০ কিলোমিটার দূরত্বে থাকা গোপালদী পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয় ২০ টাকা।’ আরেক যাত্রী রুবেল হোসেন বলেন, ‘আমরা যাত্রীরা ট্রলারচালকদের কাছে জিম্মি। ১০ টাকার ভাড়া ২০ টাকা আদায়ের প্রতিবাদ করলে ট্রলারমালিকেরা এক জোট হয়ে যাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। যাত্রীরা অসহায় হলেও দেখার কেউ নাই।’
কড়িকান্দির ট্রলারচালক মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ঘাটে প্রায় সময়ই নৌকা বেশি থাকে। প্রতিদিন টিপও দেওন যায় না। নৌকা বেশি হওনের কারণে ভাড়া ২০ টেকা কইরা লইতাছি। আমাগোর কড়িকান্দি থেইক্কা ৫৫টি নৌকা দিয়া মানুষ পারাপার করতাছি।’
বিষনন্দী এলাকার কাজল মিয়া বলেন, ‘আমরা সব সময় ভাড়া ২০ টেকা কইরা লই না। মাঝেমইদ্দে ভাড়া ২০ টেকা কইরা লই। নৌকা বেশি হওনের কারণে ভাড়া কিছু বেশি লইতে হয়।’
আড়াইহাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাঞ্ছারামপুরের ইউএনও মো. শওকত ওসমান বলেন, এ বিষয়ে পুলিশের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।