শুক্রবার শাহবাগ থেকে নাসিরনগরে লংমার্চ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলাসহ সারা দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ থেকে নাসিরনগর অভিমুখে লংমার্চ করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার শাহবাগে দুই ঘণ্টার অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ, সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, মাইনরিটি রাইটস মুভমেন্টের ব্যানারে কয়েক শ’ শিক্ষার্থী এ অবরোধ করেন। বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে তাঁরা অবস্থান করেন।
গত শুক্রবার একই দাবিতে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করেছিলেন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ওই দিন তাঁরা সরকারকে নাসিরনগরের ঘটনার বিষয়ে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে তিন দিনের সময় বেঁধে দেন। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় মঙ্গলবার দ্বিতীয়বারের মতো তাঁরা শাহবাগ অবরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে শাহবাগে যান।
অবরোধের সময় রাজধানীর এই ব্যস্ত সড়ক মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক বাস নির্ধারিত রুটে যেতে না পেরে রূপসী বাংলা মোড়, কাকরাইল মসজিদ, কাঁটাবন, নীলক্ষেত মোড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে চলাচল করেছে।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো: মন্ত্রী ছায়েদুল হককে বহিষ্কার, ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দির সরকারি খরচে পুনর্নিমাণ; উসকানিদাতা, ম“দাতা ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা; নিখোঁজ হিন্দু পরিবারগুলোকে খুঁজে বের করে পুনর্বাসন করা; সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীন সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা।
বেলা সোয়া একটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা অপরাধীদের বিচার চাই। তারা যে দল বা মতেরই হোক না কেন, অপরাধীদের বিচার করতে হবে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘তোমাদের দাবি পূরণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একটি সভ্য সমাজে এ ধরনের হামলা খুবই ঘৃণাজনক। সব সমাজে কিছু অপরাধী থাকে। তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।’
এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্যের আশ্বাসের পর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সমন্বয়ক হিসেবে মানিক রক্ষিত আগামী শুক্রবার সকাল আটটায় শাহবাগ থেকে নাসিরনগরে লংমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ প্রত্যাহার করেন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথাও বলেন।