আন্তর্জাতিক ডেস্ক :নিউ জিল্যান্ডের উত্তর পূর্বাঞ্চলে কয়েক ঘণ্টার ব্যাবধানে দ্বিতীয় দফায় শক্তিশালী ভূমিকম্পন অনুভূত হয়েছে। আর এরইমধ্যে প্রায় ১০০ আফটার শক অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খ্রিস্টচার্চের উত্তরপূর্বাঞ্চলে রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী সোমবার সকাল ৬:৪৫ মিনিট) এই ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে রোববার স্থানীয় সময় মধ্যরাতে (বাংলাদেশ সময় রবিবার বিকাল ৫টা) একই স্থানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৮। ভূমিকম্পের পরপরই সুনামি সতর্ক বার্তা জারি করা হয়।
উল্লেখ্য, ক্রাইস্টচার্চে ২০১১ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১৮৫ জন নিহত হয়। প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া শহরটির অবকাঠামো। যা এখনও আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
রবিবারের প্রথম দফা ভূমিকম্পে বেশ কিছু ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বলে জানা গেছে। বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভূমিধসে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। অনেক মানুষের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্প ও সুনামির পর হাজার হাজার মানুষ ঘর ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়। এরই মধ্যে দেশটির জরুরি উদ্ধারকারী দল হেলিকপ্টারে করে উপদ্রুত এলাকায় উদ্ধারকাজ শুরু করে।
ভূমিকম্প সংশ্লিষ্ট ঘটনায় রবিবার দুইজনের প্রাণহানির কথা জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। ভূমধ্যসাগরীয় সুনামি সর্তকতা কেন্দ্র জানায়, নিউ জিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ডের কাইকৌরা উপকূলে প্রায় সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার ঢেউ আঘাত হেনেছে। আগামী কয়েক ঘণ্টা সুনামির ঘটনা অব্যাহত থাকার আশঙ্কা করছেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী জন কি দুজন মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সুনামির আবার আঘাত হানার কোনো লক্ষণ এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। তবে এ ব্যাপারে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। দেশটির সিভিল ডিফেন্স মন্ত্রণালয় সতর্কবার্তায় জানায়, সুনামিতে ঢেউয়ের উচ্চতা পাঁচ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। মন্ত্রণালয়ের জাতীয় নিয়ন্ত্রক সারাহ স্টুয়ার্ট-ব্ল্যাক বলেছেন, ‘প্রাথমিক সুনামি আঘাত হেনেছে। তবে এর পরবর্তী প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না। আসন্ন সুনামি আগেরটার চেয়েও বড় হতে পারে।’
নিউ জিল্যান্ড দেশটি তথাকথিত ‘রিং অব ফায়ার’-এর উপর অবস্থিত। এই ত্রুটি রেখায় ঘনঘন ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত হয়। এই রিংয়ের পরিধি পুরো প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে। নিউজিল্যান্ডে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সুনামি আঘাত হেনেছে। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় মধ্যরাতে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের পরপরই সুনামি সতর্কতা জারি করে দেশটির কর্তৃপক্ষ। পরে সকালে প্রধানমন্ত্রী জন কি জানান, ভূমিকম্পে দুজন নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানায়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির পূর্ব উপকূলের শহর ক্রাইস্টচার্চ থেকে ৯১ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে।