আন্তর্জাতিক ডেস্ক :মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করে ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘একলা চলো’ নীতি অনুসরণ করে ইউরোপ কিংবা যুক্তরাষ্ট্র নিরাপদ থাকতে পারে না। এর ফলে নিরাপত্তা নিয়ে বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্ব সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় সবচেয়ে সংগঠিত ও শক্তিশালী সামরিক জোট ন্যাটোকে ‘বাতিল সংস্থা’ বলে উল্লেখ করে ট্রাম্প ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসা উচিত বলে উল্লেখ করেছিলেন। ন্যাটো জোটের কোনও সদস্য রাষ্ট্রের উপর আক্রমণ সংস্থাটির সকল সদস্য রাষ্ট্রের উপর আক্রমণ বলে বিবেচনা করে। কিন্তু ট্রাম্প বলেন, তার নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যদি সঠিকভাবে তার প্রাপ্য না বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আক্রমণের শিকার কোনও মিত্র দেশের সহায়তা দেয়ার বিষয়ে দ্বিতীয়বার ভাববেন তিনি। ট্রাম্পের দাবি, কারণ ন্যাটোর ব্যয়ভারের ৭০ শতাংশই বহন করে যুক্তরাষ্ট্র।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য অবজারভার পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে স্টলটেনবার্গ নিজেও অবশ্য স্বীকার করেন, বর্তমানে ন্যাটোর খরচের ৭০ শতাংশই বহন করে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে অন্যদের খরচ আরও বাড়ানোর ব্যাপারে ট্রাম্পের দাবির যৌক্তিকতা আছে বলেও মনে করেন তিনি।
সেখানে তিনি বলেন, ‘৯/১১ হামলার পরে ন্যাটো আফগানিস্তানে হামলার দায়িত্ব নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের উপর হামলার জবাব দিতে গিয়ে এক হাজারেরও বেশি ইউরোপীয় সেনা নিহত হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমরা যে স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি ভোগ করছি, এটিকে এখন বেশ সহজ মনে হতে পারে। অনিশ্চিত এই সময়ে আমাদের শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রয়োজন এবং ইউরোপীয়দেরও অর্থনৈতিক ভারটা ভাগ করে নেওয়া প্রয়োজন।’
স্টলটেনবার্গ তার নিবন্ধে আরও লেখেন, ‘তবে মার্কিন নেতারা সব সময়ই মনে করেন একটি স্থিতিশীল এবং নিরাপদ ইউরোপে তাদের কৌশলগত অনেক স্বার্থ রয়েছে।’ সব কিছুর ওপরে ইউরোপ এবং আমেরিকার অংশীদারিত্বের বিষয়টি স্বীকৃতি দেওয়া দরকার বলে মনে করেন ন্যাটের এই মহাসচিব।
এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক মুখপাত্র শুক্রবার জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আস্থা তৈরিতে কাজ করবেন ট্রাম্প। এর জন্য প্রয়োজনে রুশ সীমান্তে থাকা ন্যাটো বাহিনী থেকে নিজের সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র। রুশ কর্মকর্তার এমন মন্তব্যের পরই ট্রাম্পকে সতর্ক করেন স্টলটেনবার্গ।