আন্তর্জাতিক ডেস্ক :বামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্কের সঙ্গে নতুন শান্তিচুক্তি করেছে কলম্বিয়া সরকার। ছয় সপ্তাহ আগে মূল শান্তিচুক্তিটি গণভোটে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর নতুন করে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়াস থেকে দুই পক্ষের মধ্যে কিউবায় নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।এর আগে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস এবং বিদ্রোহী নেতা তিমোলিয়ন জিমেনেজ, যিনি তিমোশেঙ্কো নামেও সমধিক পরিচিত, বুলেটের তৈরি একটি কলম দিয়ে এক ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। দেশটির উপকূলীয় শহর কার্টেজিনায় ২৬ সেপ্টেম্বর ওই শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গণভোটে দেশটির ৫০ দশমিক ২৪ শতাংশ মানুষ শান্তিচুক্তির বিপক্ষে অবস্থান নেন। শান্তিচুক্তির পক্ষে ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ ভোট দেন। পক্ষে ও বিপক্ষে ভোটের পার্থক্য ৬৩ হাজার। মোট ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ গণভোটে অংশ নেন।
গণভোটের ওই অপ্রত্যাশিত রায়ের ফলে শান্তি প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবে ফার্ক বিদ্রোহীরা অস্ত্রবিরতি কার্যকর রাখবেন বলে ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা জারি থাকে।
শান্তিচুক্তির বিপক্ষে অবস্থানকারী সাবেক প্রেসিডেন্ট আলভারো উরাইব দাবি করেন, ‘কলম্বিয়ানরা শান্তি চায়, কিন্তু এই চুক্তির সংশোধন প্রয়োজন।’ ওই চুক্তিতে বামপন্থী গেরিলাদের বেশি সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এবারের চুক্তি নিয়ে আলোচনায় আলভারো সংযুক্ত ছিলেন। শনিবার কিউবার নতুন শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই চুক্তির মাধ্যমে ৫২ বছর ধরে চলা গেরিলা যুদ্ধের স্থায়ী অবসান হবে।
নতুন এই চুক্তিটিকে এখনও সরকারিভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, পার্লামেন্টের মাধ্যমে চুক্তিটি অনুমোদন দেওয়া হবে। তবে এবার চুক্তিটি কোনো গণভোটে যাবে না বলে নিশ্চিত করেছে সরকারি বেশ কিছু সূত্র।
উভয় পক্ষ যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘যুদ্ধ বন্ধে আমরা নতুন একটি সমঝোতায় পৌঁছেছি। চুক্তিটিতে কিছু পরিবর্তন, ব্যাখ্যা সংযোজন এবং বেশ কিছু সামাজিক গোষ্ঠীর অবদানের কথা স্থান পেয়েছে।’ বিবৃতিটি কিউবা ও নরওয়ের কূটনীতিকরা পড়ে শোনান। এই দুই দেশের মধ্যস্থতায় কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক বিদ্রোহীদের মধ্যে কিউবার রাজধানী হাভানায় শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।