ফিচার ডেস্ক: বিস্তৃত প্রাণীসাম্রাজ্যে কত যে প্রাণী রয়েছে! এদের অনেকের নামও অামরা জানি না। লাইগার, জংকি, লিওপন, নারলাগা, কামা এদের সচরাচর দেখাও যায় না। যেসব নাম আওড়ানো হলো, এরা কোনো ফিকশনের কাল্পনিক প্রাণী নয়, এরা হাইব্রিড। পরিচিত হয়ে নিন ১০টি অদ্ভুত ও বিরল হাইব্রিড প্রাণীর সঙ্গে-
লাইগার (সিংহ+ বাঘিনী)
অনেকে বলেন বন্য লাইগার রয়েছে। কিন্তু আসলে খাঁচায় লালন-পালন করার সময় তারা বংশ বিস্তার করে। অভিজাত শ্রেণীর দুই প্রাণীর সংমিশ্রণ লাইগার খুব দ্রুত বড় হয়। চারশো ১০ কেজি ওজনের লাইগার বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিড়াল।
টাইগন (বাঘ+ সিংহী)
বাঘ ও সিংহীর হাইব্রিড হচ্ছে টাইগন। একই গোত্র কিন্তু ভিন্ন দুই প্রজাতির সন্তান টাইগন বাবা-মা দুজনের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। মায়ের কাছ থেকে স্পট ও বাবার কাছ থেকে পাওয়া ডোরাকাটা দাগ এদের শরীরে বর্তমান। এরা আকারের দিক থেকে বাবার তুলনায় মায়ের বৈশিষ্ট্য বেশি পায়। ওজন ১৮০ বা এর বেশি হয়।
জেব্রয়েড
জেব্রয়েড, জর্স, জংকি এরা প্রত্যেকেই জেব্রা ও অশ্বগ্রোত্রের পরবর্তী প্রজন্ম। ঘোড়ার সঙ্গে জেব্রার সম্মিলনে জর্স এবং জেব্রা ও গাধার হাইব্রিড জংকি। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে জেব্রয়েড উৎপাদিত হয়ে আসছে।
জিপ (ছাগল+ভেড়া)
যদিও ছাগল ও ভেড়া দেখতে অনেকটা একরকম। কিন্তু এরা দুটোই ভিন্ন গোত্রের। ভেড়া ওভিস গোত্রের। এদের দেহে ক্রোমোজমের সংখ্যা ৫৪। অন্যদিকে ছাগল কাপরা গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এদের ক্রোমোজমের সংখ্যা ৬০।
কামা (উট+লামা)
দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমে আন্দিজের একটি প্রাণী লামা। আর কামা হচ্ছে উট ও লামার ছানা। ১৯৯৮ সালে দুবাইয়ের ক্যামের রিপ্রোডাকশন সেন্টারে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে প্রথম কামার জন্ম হয়। বিশ্বে এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি কামার জন্ম হয়েছে।
লিওপন (চিতা+সিংহ)
প্রিটি কুল! যদিও দেখতে দারুণ, তবে লিওপনের নানাবিধ ভয়ঙ্কর স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত খুব কম লিওপনই বেঁচে থাকতে পারে। এদের মধ্যে ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বেশি। ফলে যতটুকু সময়ই বাঁচে তা কষ্টসাধ্য।
জাগলায়ন (পুরুষ জাগুয়ার+ সিংহী)
ছবিতে যে দুটো জাগলায়ন রয়েছে এরা ভাইবোন। কানাডার অন্টারিওর ব্যারে Bear Creek Exotic Wildlife Sanctuary এর বাসিন্দা দুই সহোদর-সহোদরা বাবা জাগুয়ার ও সিংহীমায়ের সন্তান। জাগলায়ন বোন জাহজারা (বামপাশে) বাবার কৃষ্ণবর্ণ জিনের প্রভাবে কালো রঙ পেয়েছে। অন্যদিকে তার ভাই সুনামি (ডানপাশে) দেখতে মায়ের মতোই!
ম্যুলার্ড (পিকিন হাঁস+মস্কোভি হাঁস)
দু’প্রজাতির হাঁসের সমস্বয়ে তৈরি ম্যুলার্ড হচ্ছে এমন একটি হাইব্রিড প্রজাতি যাদের প্রাকৃতিকভাবেই প্রজনন ক্ষমতা নেই। এদের জন্মই সম্ভবত হয় ফুড রেসিপি হওয়ার জন্য।
সাভানা বিড়াল (বনবিড়াল+গৃহপালিত বিড়াল)
গৃহপালিত হাইব্রিডের মধ্যে আদর্শ প্রাণী সাভানা বিড়াল। ১৯৮৬ সালে সালের এপ্রিলে প্রথম সাভানা বিড়ালের জন্ম হয়। ২০০১ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্যাট অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড এ প্রজাতির রেজিস্ট্রেশন করে।
গ্রোলার বিয়ার (গ্রিজলি বিয়ার+পোলার বিয়ার)
এরা প্রাকৃতিকভাবেই হাইব্রিড করে। এর পেছনে একটি দুর্ঘটনাও রয়েছে। পরিবেশ ও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে পোলার বিয়ারের বাসস্থান পাল্টাচ্ছে, তাদের আরও দক্ষিণে যেতে বাধ্য করছে। যেখানে শ্বেত ভাল্লুকদের সঙ্গে প্রণয় হচ্ছে ধূসরদের। বাংলানিউজ
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।