ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ম না মেনে অর্পিত সম্পত্তিতে পৌর সভার কিচেন মার্কেট নির্মান
---
আমিরজাদা চৌধুরী : দোকান বরাদ্ধ না দিতে মেয়রকে জেলা প্রশাসকের চিঠি । ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মধ্যপাড়ায় অর্পিত সম্পত্তিতে বিপুল অংকের টাকা ব্যয়ে মেয়র হেলাল উদ্দিন কিচেন মার্কেট নির্মাণ করেছে পৌরসভা। এই মার্কেটে ৭টি শেড, ৮০টি প্লট এবং একটি টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। গত ২০ অক্টোবর এই মার্কেটের উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন।
এদিকে নিয়ম না মেনে অর্পিত সম্পত্তিতে মার্কেট নির্মাণ করায় এর ভিটি বরাদ্দ (দোকান বরাদ্দ) কার্যক্রম বন্ধের জন্য এক চিঠিতে পৌর মেয়রকে অনুরোধ জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক।
গত ২৭ অক্টোবর ৪০২/১ (৪) নং স্মারকে জেলা প্রশাসক ডঃ মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিকে এই চিঠি দেন।
এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মৌজার ১৩৬৭ ও ১৩৬৯ দাগের ভূমি ‘ক’ তফসিলভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি। ওই সম্পত্তিতে কিচেন মার্কেট নির্মাণ করে ভিটি বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সরকারের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী। ভূমি মন্ত্রনালয়ের হাট-বাজার সংক্রান্ত ৭ অক্টোবর ১৯৯৫ এর ভূম-৭-বিবিধ-২৪/৯৫/৪৯১ (৭৪) নং স্মারকে হাট-বাজার সৃজন/স্থাপনের এখতিয়ার সরকার তথা ভূমি মন্ত্রনালয়ের উপর ন্যস্ত। পরিপত্রের ওই অনুচ্ছেদ অনুযায়ি এ সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক সম্পন্ন করার কথা।
কিন্তু উল্লেখিত অর্পিত সম্পত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা সম্পূর্ণ বে-আইনীভাবে জেলা প্রশাসকের কোনো প্রকার পূর্বানুমতি ব্যতিরেকেই কোটি টাকা ব্যয়ে কিচেন মার্কেট নির্মাণ সম্পন্ন করে এবং ব্যবসায়িদের মধ্যে ভিটি বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
এদিকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ চেয়ে ভূমি মন্ত্রনালয়ের যোগাযোগ করলে ওই মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ হাবিবুল কবির চৌধুরি স্বাক্ষরিত এক পত্রে জেলা প্রশাসককে সংশ্লিষ্ট নালিশা সম্পত্তি সরকারি সম্পত্তি ঘোষণাপূর্বক উক্ত সম্পত্তিতে জনস্বার্থে বাজার স্থাপন/অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এমতাবস্থায় কোটি টাকা ব্যয়ে মেয়র হেলাল উদ্দিন কিচেন মার্কেট নির্মাণ করে ফেঁসে যেতে বসেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
জেলা প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আইন অনুযায়ি পৌরসভা ওই সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণ করে মার্কেট নির্মাণ করতে পারে না এবং মার্কেটের দোকান বরাদ্দ করলে তা আইনসিদ্ধ হবে না। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসন ওই মার্কেট উচ্ছেদ কিংবা ব্যবসায়িদের উচ্ছেদ করলেও সংশ্লিষ্টদের কিছুই করার থাকবে না।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, মার্কেটের বরাদ্দ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা জনস্বার্থেই এটা করেছিলাম। এখন জেলা প্রশাসকের চিঠি পেয়ে তা বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই সম্পত্তি অনেক আগে থেকেই পৌরসভা রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছিল।