আবরার হত্যা : এখনই মন্তব্য করতে চায় না পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার মোটিভ কী ছিল, সে সম্পর্কে এখনই কথা বলতে চান না ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মূল ফোকাসটা আসলে ওখানে। আসলে মোটিভটা কী ছিল? আসলে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা আবরারকে সেখানে নিয়ে গেছে, নাকি অন্য কোনো কারণে ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। প্রাথমিকভাবে আমরা যে তথ্যটি পেয়েছি, সেটি পরবর্তী তদন্তের সঙ্গে যদি না মেলে এ কারণে মোটিভটা সম্পর্কে এ পর্যায়ে আমরা আপনাদের বলতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু যাচাই-বাছাই চলছে। আমরা যেটা প্রাথমিকভাবে পাচ্ছি, তা হলো অনেকগুলো ঘটনার সমষ্টি। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল সেটি এখনো আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। এটা পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য-প্রমাণ-আলামত পাশাপাশি জবানবন্দি, আমরা যখন মনে করবো তারা সত্য কথা বলছে এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছে, সেটা সঠিক মনে হলে মোটিভ সম্পর্কে আমরা ক্লিয়ার ব্ক্তব্য দেব।’
আবরার হত্যার তদন্ত একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে জানিয়ে মোটিভটা সম্পর্কে এখনই ক্লিয়ার কোনো মন্তব্য করতে চান না বলে জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার।
অমিত সাহাকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আইন অনুযায়ী একজন মানুষ অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে সে ঘটনাস্থলে থেকেও করতে পারে আবার ঘটনাস্থলে না থেকেও করতে পারে। তদন্তের সূত্রানুযায়ী, কোনো কোনো কেসে আপনারা দেখেছেন যে ঘটনাস্থলে না থেকেও হয়তো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু তথ্য প্রযুক্তির যুগ, তাই সেই সমস্ত আলামত বিশ্লেষণ ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আমাদের মনে হয়েছে, অমিত সাহা ঘটনাস্থলে হয়তোবা ছিল না। কিন্তু এই ঘটনায় তার দায়-দায়িত্ব রয়েছে, প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষ দায়িত্ব রয়েছে। সে কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
সেই ব্যাপারে অমিত সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি প্রাপ্ত অন্য তথ্যগুলোও পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
শুধু স্ট্যাটাস নাকি শিবির সন্দেহে আবরারকে হত্যা করা হয়েছে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই মোটিভটা আমরা আরেকটু জিজ্ঞাসাবাদ শেষে, আলামত বিশ্লেষণ করে আমরা বিষয়টি পরিষ্কার করতে পারবো।’
উল্লেখ্য, গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে ডেকে নেন শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর তাকে কয়েক ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওইদিন রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের দোতলায় ওঠার সিঁড়ির করিডোর থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরদিন সোমবার রাতে আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১০ জন এজাহারনামীয় ও বাকি তিনজন এজাহার বহির্ভূত আসামি।