শুক্রবার, ১১ই অক্টোবর, ২০১৯ ইং ২৬শে আশ্বিন, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসছেন উপাচার্য

news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সব ভবনে তালা মেরে দেওয়ার হুমিকর পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসছেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। আগামীকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব কামরুল হাসান।

বৃহস্পতিবার সকালে বুয়েট শহীদ মিনারের অবস্থান কর্মসূচিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে এসে কথা বলার জন্য বলা হয় উপাচার্যকে। তবে উপাচার্য এসে দেখা না করলে বুয়েটের সব ভবনে তালা মেরে দেওয়ার হুমকি দেয় শিক্ষার্থীরা।

তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা দাবির মধ্যে ভিসি স্যারের জবাবদিহির বিষয়টি রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সব প্রশ্নের জবাব দিতে শুক্রবার বিকেল ৫টায় তাদের সঙ্গে বৈঠক করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বুয়েটের একজন শিক্ষকের মাধ্যমে এ প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।’

এর আগে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ৪৮ ঘণ্টা পর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। এ সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার শুরুর দিকে নীতিগতভাবে তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানান সাইফুল ইসলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানালে অপারগতা দেখান অধ্যাপক উপাচার্য। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান শুরু করেন।

উপাচার্য ক্যাম্পাসে আসার পর শিক্ষার্থীরা জানতে চান, দুদিন ধরে তিনি কোথায় ছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো জবাব না দিয়ে সরাসরি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চান। মাইক দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আবরারের মৃত্যু হয়েছে।’

উপাচার্যের এমন মন্তব্য শুনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন। পরে তারা আবরারের মৃত্যু নয় তার খুন হয়েছে বলে চিৎকার শুরু করলে উপাচার্য বলেন, ‘ঠিক আছে খুনই হয়েছে।’

গত রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোমবার রাতে ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা বরকত উল্লাহ ঢাকার চকবাজার থানায় মামলা করেন। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করতে ডিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার ১০ আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, উপসমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না, মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুজাহিদুর রহমান ও মেহেদী হাসান রবিন।

মামলাটিতে গতকাল বুধবার আরও তিন আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন ও সাসছুল আরেফিন রাফাত।