শুক্রবার, ১১ই অক্টোবর, ২০১৯ ইং ২৬শে আশ্বিন, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ

ইফতির স্বীকারোক্তি : আবরারকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মারধর করা হয়

news-image

আদালত প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা মামলায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপসমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াছির আহসান চৌধুরীর কাছে এ জবানবন্দি প্রদান করেন তিনি।

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আবরার হত্যাকাণ্ডের বর্ণনার সঙ্গে তার নিজের জড়িত থাকাসহ অপর আসামিদের নাম প্রকাশ করেছেন তিনি। জবানবন্দি দেওয়ার আগে ইফতিকে আদালতে হাজির করে আসামিকে কোর্টে প্রেরণ ও জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। আবেদনে এসব কথা উল্লেখ করেন তিনি।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদনে বলেন, ‘আসামি ইফতি মোশাররেফ সকাল ৬ অক্টোবর আবরার ফাহাদকে বুয়েট শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুম থেকে হত্যার উদ্দেশ্যে ডেকে নিয়ে যান। পরের দিন হলের ২০১১ নম্বর রুমের ভেতরে নিয়ে ইফতিসহ মামলার এজাহারভুক্ত ও অন্যান্য আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্রিকেটের স্টাম্প এবং লাঠি-সোটা দিয়ে আবরারের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচণ্ড মারধর করেন। মারধরের ফলে তিনি মারা যান।’

তার মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা ওই ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে মৃতদেহ ফেলে রাখেন। পরে কয়েকজন ছাত্র তার দেহ সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন, বলেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।

আবরার হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি ইফতি মোশাররেফ সকাল বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি রাজবাড়ী সদর থানার লক্ষ্মীকোল গ্রামের বাসিন্দা।

গত মঙ্গলবার ইফতি মোশাররেফসহ ১০ আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওই রিমান্ডের দুদিন শেষ হওয়ার পরই ইফতি আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করলেন।

রিমান্ডে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না, মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুজাহিদুর রহমান ও মেহেদী হাসান রবিন।

মামলাটিতে গত বুধবার আরও তিন আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন ও সাসছুল আরেফিন রাফাত।

গত রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোমবার রাতে ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা বরকত উল্লাহ ঢাকার চকবাজার থানায় মামলা করেন। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করতে ডিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।