ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বহিষ্কার, সেই আ.লীগ নেতা যা বললেন
খুলনা প্রতিনিধি : ফেসবুকে সরকার, দলীয় প্রধান এবং রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. শেখ বাহারুল আলমকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে যে অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই সরকারবিরোধী বা রাষ্ট্রবিরোধী নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানার পর গতকাল বুধবার রাতে বাহারুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত অফিসিয়াল কোনো কাগজ বা চিঠি পাইনি। আমি বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক ও আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে কথা বলেছি। দেশের পক্ষে কথা বলা ও ভারতের বিপক্ষে কথা বলা মানেই দলের বিরুদ্ধে কথা বলা হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের যে সকল স্বার্থ এবং অধিকার ভারতের কাছ থেকে পাওয়া আবশ্যক ছিল, তা না পাওয়ায় সংক্ষুব্ধ উক্তি ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে। এতে জননেত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও ভারত সফর সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।’
বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থ ভারত যথাযথভাবে পালন না করার কারণে ফেসবুকে ওই পোস্ট দেন বলেও তিনি জানান।
আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত এই নেতা বলেন, ‘এভাবে যদি আমাদের অধিকার ক্ষুন্ন হতে থাকে এক সময় আমাদের সার্বভৌমত্ব নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেবে। ভারতের আধিপত্যের কারণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে-এমন একটি আশঙ্কা থেকেই এ বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।’
ফেসুবকে দেওয়া ওই পোস্টটি রাষ্ট্রবিরোধী নয় জানিয়ে বাহারুল আলম বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই দলীয়বিরোধী ও সরকারবিরোধী বা রাষ্ট্রবিরোধী তো নয়ই। তারপরও তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি মনে করি তাদের সুবুদ্ধির উদয় হবে। হাতে কাগজ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় বাহারুল আলমকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাহারুল আলমকে বহিষ্কারের পাশাপাশি কেন তাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে না, তা আগামী সাত দিনের ভেতরে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে চুক্তিগুলো করেছেন, বাহারুল আলম দলীয় পদে থেকে নিজের ফেসবুক পেজে সেগুলোর সমালোচনা করে পোস্ট দিয়েছেন। এতে দলের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।