বুবলীর ভাইয়ের ভর্তি জালিয়াতি; কি বললেন শাকিব?
দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রিয় মুখ শবনম বুবলী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জানালেন, তার একমাত্র ছোটভাই জাহিদ হাসান আকাশ এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডের অধীন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের বাণিজ্য বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ‘জিপি ৫’ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
ছোট ভাইয়ের দারুন ফলাফলে এই নায়িকার পরিবারে এখন অনেকটা উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। খবরটি জানিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন বুবলী।
সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ছোটভাই রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে (এইচএসসি)-তে ‘জিপিএ ৫’ পেয়েছে। তোমার জন্য গর্বিত ভাইয়া। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’ সেই আনন্দে ভাগ বসিয়েছিলেন নায়ক শাকিব খানও। নায়িকার ভাইয়ের এমন কীর্তিতে তিনি শুভকামনা জানান।
আজ প্রকাশ হল ভিন্ন খবর। এ যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে। তুখোড় মেধাবী বনে চলে গেলেন নায়িকা শবনব বুবলীর ছোট ভাই জাহিদ হাসান আকাশ।
২০ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন তিনি। যে কিনা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটে ফেল করেছিলেন।
গতকাল (১৬ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে ২৬.২১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। এর আগে পরীক্ষার দিনই এই ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের মধ্যেই ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেখানে মেধা তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের দুই ইউনিটের ফলাফলের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঘ ইউনিটে মেধাতালিয়ায় ১০০ ক্রমের মধ্যে থাকা ৭০ জনের বেশি শিক্ষার্থী তাদের নিজ নিজ অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি।
জাহিদ হাসান আকাশ রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় এইচএসসি পাস করেছেন। গত ১২ অক্টোবর তিনি ঢাবির সমাজ বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তির জন্য ঘ ইউনিটে পরীক্ষা দেন। সেখানে ব্যবসায় শাখা বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। অথচ ব্যবসায় শিক্ষা শাখার এই শিক্ষার্থী বাণিজ্য অনুষদে ভর্তির জন্য দেওয়া গ ইউনিটের পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন।
ঢাবির গ ইউনিটের পরীক্ষায় ফলাফলে দেখা যায় তিনি বাংলায় পেয়েছিলেন ১০.৮, ইংরেজিতে পেয়েছিলেন ২.৪০। অথচ এই শিক্ষার্থী ঘ ইউনিটের পরীক্ষায় বাংলায় ৩০ এর মধ্যে ৩০, ইংরেজিতে ৩০ এর মধ্যে ২৭.৩০ পেয়েছেন। যা রেকর্ড বলা যায়।
এ বিষয়ে ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ঘ ইউনিটের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘আমরা তাকে ভর্তি করাইনি। তার ফল প্রকাশ হয়েছে। সে আসলে তার বিষয়ে তদন্ত ও যাচাই শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এবং প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ জোরালো হলো কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না এটা প্রশ্নফাঁস না, ডিজিটাল জালিয়াতি। যারাই অভিযুক্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান হবে। ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে আসা এই শিক্ষার্থী ঢাবির গ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সর্বমোট ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছিলেন ৩৪.৩২। অথচ মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ঘ ইউনিটের পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি ১১৪.৩০ পেয়ে সম্মিলিত মেধাতালিকার বাণিজ্য শাখায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০ বছরে ১২০ এর মধ্যে ১১৪.৩০ কেউ পায়নি। দ্বিতীয় স্থানে যিনি রয়েছেন তিনি ১২০ এর মধ্যে পেয়েছেন ৯৮.৪০। মেধাক্রমে যার ব্যবধান অনেক।
আরেক শিক্ষার্থী তাসনিম বিন আলম ঢাবি ঘ ইউনিটে (বিজ্ঞান শাখায়) প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।
অথচ বিজ্ঞান শাখার এই শিক্ষার্থী তার নিজের অনুষদ ক ইউনিটের পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে ৪৩.৭৫ পেয়ে ফেল করেছিলেন। সেই তিনিই ঢাবি ঘ ইউনিটে সে ১২০ নম্বরের মধ্যে ১০৯.৫০ পেয়ে সম্মিলিত মেধা তালিকার বিজ্ঞান শাখায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।
এমন কাণ্ডে শাকিব খান কী বলবেন? তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, আমি কি বলবো এ বিষয়ে! ও ভালো রেজাল্ট করেছিল শুনে ভালো লেগেছে। এখন যদি এমন কিছু সত্যিই হয়ে থাকে। সেটা দু:খজনক।
শাকিব বর্তমানে ‘একটু প্রেম দরকার’ ছবির প্রথম পর্যায়ের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত। শুটিং চলছে শাকিব খানের শুটিং বাড়ি ‘জান্নাতে’। শাহিন সুমন পরিচালিত এই ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করছেন শবনম বুবলী। তিনিও জান্নাতে অবস্থান করছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রথম দফার শুটিং শেষ হবে বলে জানা যায়।
সূত্র: বাংলা ইনসাইডার