বুধবার, ২৪শে অক্টোবর, ২০১৮ ইং ৯ই কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

আখাউড়ায় ধর্ষণের পর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, ধর্ষক গ্রেফতার

news-image
বিশেষ প্রতিনিধি, আখাউড়া : আখাউড়ায় কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনা নাশক খাইয়ে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গাউস মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করা স্কুল ছাত্রীর বিবস্ত্র ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে  দেয়ার ভয় দেখিয়ে আবারো ধর্ষণ ও বিয়ের প্রস্তাব এলে এসব ছবি দেখিয়ে বর পক্ষকে না করে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে ওই ধর্ষকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় আখাউড়া থানায় ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী অভিযোগ দিলে পুলিশ গতকাল সোমবার গাউস মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই ছাত্রীকে   মঙ্গলবার  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কসবা উপজেলা চন্দ্রপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান ওই স্কুল ছাত্রী তার ফুফুর বাড়ির আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের হরিপুর এলাকায় থেকে পড়াশুনা করতো। গত বছর সে পাশ্ববর্তী কসবা উপজেলার শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস. এস. সি পরীক্ষা দেয়। হরিপুর থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য সে মনিয়ন্দের দীঘিরজান এলাকার মো. আবদু প্রকাশ আব্দু ডাক্তারে ছেলে গাউস মিয়ার অটোরিকশায় নিয়মিত চলাচল করতো। ২২ ফেব্রুয়ারি শেষ পরীক্ষার দিন গাউস মিয়া ওই পরীক্ষার্থীকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে কোমল পানীয়ের সঙ্গে কিছু একটা মিশিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। জ্ঞান ফিরলে ওই পরীক্ষার্থী নিজেকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পায়। বিবস্ত্র অবস্থার ছবি গাউস মিয়া তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে।
ধর্ষণের শিকার ওই মেয়েটি জানায়, সে বর্তমানে কসবার আলহাজ গোপীনাথপুর আলহাজ শাহআলম কলেজ থেকে এইচ এস সি পরীক্ষার্থী। ওই ঘটনার পরও গাউস তার পিছু ছাড়েনি। শারিরিক সম্পর্ক গড়তে না চাইলে গলায় ধারালো অস্ত্র ধরতো। তার বিয়ে এলে বিবস্ত্র ছবি দেখিয়ে বর পক্ষকে না করে দিতো।
মেয়েটির ফুফু জানায়, সরলতার সুযোগ নিয়ে তার ভাতিজিকে ধর্ষণ করে গাউস মিয়া। তিন সন্তানের জনক গাউস মিয়া এক পর্যায়ে তার ভাতিজিকে বিয়ে করারও প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন রকম হুমকিও দেয়া হয়। অন্য জায়গা থেকে একাধিক বিয়ের প্রস্তাব এলে বর পক্ষকে মোবাইল ফোনে থাকা বিভিন্ন ছবি দেখিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়। সর্বশেষ গত ২১ সেপ্টেম্বরও বর পক্ষকে এসব ছবি দেখানো হলে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন তরফদার অভিযোগের সত্যতানিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তারের পর গাউস মিয়া ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।