বৃহস্পতিবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১২ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

স্কুল ছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ

নিউজ ডেস্ক।। ঝালকাঠির রাজাপুরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক বখাটে তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে একটি ঘরের ভেতর আটকে রাখে। পুলিশ গিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করার পরে ঝালকাঠি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উপজেলার চাড়াখালী গ্রামে রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মেয়েটির বাবা ঢাকার একটি গার্মেন্টে চাকরি করেন। মা না থাকায় দাদা-দাদির সঙ্গেই বসবাস করে ছাত্রীটি। রোববার সকালে দুসম্পর্কের এক চাচার সঙ্গে পার্শ্ববতী পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার হরিনপালা যায়। সেখান থেকে দুপুরে বাড়ি ফিরছিল তারা।

পশ্চিম চাড়াখালী এলাকায় আসলে চাচার কাছ থেকে জোর করে ওই ছাত্রীকে ছিনিয়ে নেয় স্থানীয় বখাটে হেলাল তালুকদার (২৮) ও তার সহযোগিরা। এসময় চাচাকে ভয় দেখিয়ে ছাত্রীকে স্থানীয় শাহ আলম কাজীর একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে হেলাল। ধর্ষণের পরে ছাত্রটিকে পাশের মন্টু হাওলাদারের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়।

ওই ছাত্রীর দাদাকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে হেলালের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়। টাকা না দিলে ছাত্রীকে আটকে রাখা হবে বলেও জানান হেলাল। ঘরের ভেতরে আটকে রাখা ছাত্রীকে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণের চেষ্টা চালায় হেলালের সহযোগী স্থানীয় বাবুল তালুকদার।

এরই মধ্যে খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে রাজাপুর থানার পুলিশ গিয়ে ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে উদ্ধার করে দাদা-দাদীর কাছে ফিরিয়ে দেয়। দাদা-দাদী সোমবার সকালে ব্যাথায় কাতর ছাত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নির্যাতিত ওই ছাত্রী জানায়, বখাটে হেলাল দীর্ঘ দিনধরে তাকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে উত্যক্ত করতো। রোববার সকালে হরিনপালা পার্কে চাচার সঙ্গে ঘুরে বাড়িতে ফেরার পথে রাস্তা থেকে আমাকে তুলে নেয় হেলাল। একটি নির্জন ঘরের মধ্যে ধর্ষণ করার পরে অন্য একটি ঘরে আমাকে আটকে রাখে সে। চিৎকার করলে এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমাকে যে ঘরের ভেতরে আটকে রাখা হয়েছিল, সেখানে গিয়ে বাবুল নামে এক ব্যক্তি ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে।

ছাত্রীর দাদা অভিযোগ করেন, আমার নাতীকে ধর্ষণের পরে আটকে রাখা হয়েছিল। আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চায় হেলাল। টাকা না দিলে আমার নাতীকে আটকে রাখা হবে বলে জানায় সে। আমি স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি পুলিশকে জানালে নাতিকে তারা উদ্ধার করে। এখন হাসপাতালে ভার্তি হলেও শান্তি নেই। হেলালের বাবা জাহাঙ্গীর তালুকদার লোকজন নিয়ে নাতীকে এখান থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলে। মামলা করতে নিষেধ করেছেন তিনি।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক বদরুদ্দুজা জোবায়ের বলেন, আমরা ছাত্রীটিকে ভর্তি করেছি। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

রাজাপুর থানার ওসি শামসুল আরেফিন বলেন, ধর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর দাদা মৌখিকভাবে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছে। তিনি অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।