ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যস্ত নৌকা তৈরীর কারিগররা
তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সকাল থেকেই ঠক ঠক শব্দে কর্মযজ্ঞ চলছে নৌকা তৈরীর কারিগরদের। তাদের হাতের নিপুন ছোঁয়ায় শৈল্পিক সৌন্দর্যে তৈরী হচ্ছে এক নৌকা। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমের আগেই এখানে নৌকা তৈরীর ধুম পড়ে যায়। এখানকার তৈরী নৌকার কদর রয়েছে জেলা জুড়ে।ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এ এলাকায় নৌকা এখনো তার পূর্বের অবস্থানে ধরে রেখেছে। এই নৌকা তৈরীকে কেন্দ্র করে এখানে অর্ধশতাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। আখাউড়া উপজেলার মোগড়া বাজার এলাকায় গড়ে উঠেছে এ নৌকা তৈরীর এক শিল্প।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধরখার-আখাউড়া সড়কের মোগড়া বাজার এলাকায় রাস্তার দু’পাশে ছোট-বড় প্রায় অর্ধ-শতাধিক নৌকা তৈরীর ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে উঠেছে। কারিগররা নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। রাস্তার পাশে বিক্রির জন্য তৈরীকৃত নৌকা সাজিয়ে রাখছেন সাড়ি সাঁড়ি করে।
এখানে সাধারণত ডিঙ্গি ও কোষা দু,ধরনের নৌকা তৈরী হয়। কোষা ৯-১০ফুট আর ডিঙ্গি নৌকা ১৫-১৬ ফুট দৈর্ঘে হয়ে থাকে। তবে এখানে সবচাইতে কোষা নৌকার কদর বেশী রয়েছে বলে বিক্রেতারা জানায়।
কারিগর,কাঠসহ প্রয়োজনীয় মালামাল প্রস্তুত থাকলে দৈনিক ৪টি থেকে ৫ টি নৌকা তৈরী করা যায় বলে একাধিক কারিগর জানায়। প্রতিটি কোষা নৌকা ৩হাজার ৫শ থেকে ৪হাজার টাকার উপর বিক্রি হয় বলে তারা জানায়। সে সাথে তৈরী হয় নৌকার বৈঠাও।
নৌকার কদর দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ,কসবার নয়নপুর, মনিপুর, সালদানদী সুহিলপুর, সাহবাজপুর, বিজয়নগরের ইসলামপুর, চম্পকনগর, হিরাতলা,সিঙ্গারবিল, সদর উপজেলার ঘাটিয়ারা, বরিশল, কোড্ডা, চান্দি , আখাউড়া উপজেলার আমোদাবাদ, দুর্গাপুর, তারাগন, দেবগ্রাম, ধাতুরপহেলা, নয়াদিল, রুটি, আদিলপুরসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন এখান থেকে নৌকা ক্রয় করে থাকে।
ব্যবসায়ী গৌতম কুমার জানায়, কাঠের আসবাবপত্র ও নৌকা তৈরী তাদের পৈত্রিক ব্যবসা। এখানে তারা দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে এ ব্যবসা করে আসছেন। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমের আগে নৌকা তৈরীর ধুম পড়ে। শ্রমিকের মজুরি, কাঁঠসহ অন্যান্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন আর আগের মতো লাভ হয় না।
অজিত সূত্রধর,স্বপন সূত্রধর জানায়, সাধারণত কড়ই,আম ও তুলা গাছের কাঁঠে সব চাইতে বেশী নৌকা তৈরী করা হয়। তবে নৌকা তৈরীতে কাঠ পেরেক, পাতাম বা জলুই ব্যবহার করা হয়। দৈনিক ৩ থেকে ৪টি নৌকা বিক্রি করা যায় বলে জানায়।