‘নেতা’ নেইমারের অভিষেকেই গোল, জিতল ব্রাজিলও
স্পোর্টস ডেস্ক: ২০১০ সালের আগস্টে নিউজার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল। জাতীয় দলের হয়ে সেটি নেইমারের অভিষেক ম্যাচ। ব্রাজিলের ২-০ ব্যবধানের জয়ে তাঁর অবদান ছিল এক গোল। আট বছর পর আজ সেই একই স্টেডিয়ামে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্রাজিল জিতেছে একই ব্যবধানে।
শুধু কী তাই? নেইমারও পেয়েছেন গোলের দেখা। আট বছর আগের সেই ম্যাচের সঙ্গে এই ম্যাচের কত মিল! পার্থক্যও আছে। নেইমার তখন ছিলেন দলে নবাগত। আর এখন তিনি ব্রাজিলের নিয়মিত অধিনায়ক। এই দায়িত্ব পেয়ে প্রথম ম্যাচেই করলেন গোল আর তাঁর শুরুটাও হলো জয় দিয়ে। সেই মেটলাইফ স্টেডিয়ামেই!
দর্শকও সেবারের তুলনায় এবার অনেক কম ছিল। আট বছর আগের সেই ম্যাচে প্রায় ৭৮ হাজার দর্শকের সমাগম হয়েছিল মেটলাইফ স্টেডিয়ামে। আর আজ সকালের (বাংলাদেশ সময়) ম্যাচে দর্শক উপস্থিতি ৩২,৪৬৯।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়ার পর এই প্রথম মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। বেশ শক্তিশালি একাদশই মাঠে নামিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ তিতে। ফ্যাবিনহো-মার্কুইনহোস-থিয়াগো সিলভা-ফিলিপে লুইসদের নিয়ে সাজিয়েছিলেন রক্ষণ। মাঝমাঠে কাসেমিরো-কুতিনহো ও ফ্রেড। আর আক্রমণভাগে নেইমার, ফিরমিনোর সঙ্গে ডগলাস কস্তা। মোট ৬৭০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একাদশ। বদলি হিসেবে ব্রাজিলের জার্সিতে আর্থার মেলো ও রিচার্লিসনের অভিষেকও ঘটেছে এই ম্যাচে।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ ডেভ সারাচান অপেক্ষাকৃত তরুণ একাদশ মাঠে নামিয়েছিলেন। তাঁর একাদশের গড় বয়স ছিল ২৩ বছর। লড়াইটা যে প্রায় একপেশে হতে যাচ্ছে তা আন্দাজ করেছিলেন অনেকেই। ঘটেছেও ঠিক তাই। ৭১ মিনিটের আগ পর্যন্ত ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসনের কোনো পরীক্ষা নিতে পারেনি স্বাগতিক আক্রমণভাগ। তার আগেই অবশ্য জয় নিশ্চিত করে ফেলে ব্রাজিল। ১১ মিনিটে বক্সে ডগলাস কস্তার পাস থেকে দারুণ ভলিতে গোল করেন ফিরমিনো।
গোটা ম্যাচে প্রায় ৬৫ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা ব্রাজিল এরপর সেভাবে আক্রমণ তৈরি করতে পারেনি। যদিও এর মধ্যেই গোল করার মতো পজিশনে বল পেয়েছিলেন নেইমার। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে বিতর্কিত পেনাল্টি থেকে গোল পেয়ে যান নেইমার। ফিরমিনোর সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে যুক্তরাষ্ট্রের বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন ফ্যাবিনহো। স্বাগতিক ডিফেন্ডার উইল ট্রাপের ন্যূনতম বাধাতেই মাঠে পরে যান ব্রাজিলের এই মিডফিল্ডার। মেক্সিকান রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে স্পটকিক থেকে ব্রাজিলের হয়ে নিজের ৫৮তম গোলটি (৯১ ম্যাচ) তুলে নেন নেইমার। ব্রাজিলও এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। শেষ পর্যন্ত এটাই ম্যাচের স্কোরলাইন।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে গোল পরিশোধের সুযোগ পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ম্যাককেনি সেই সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের ফ্রেডও পেয়েছিলেন গোলের সুযোগ। বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ভুলে তিতের এই দলটা যে গুছিয়ে উঠতে বদ্ধপরিকর, তার প্রমাণ খেলার পরিসংখ্যানে। যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ৩৮৩ পাস খেলেছে ব্রাজিল সেখানে ৭৩৯! পাসিং অ্যাকুইরেসি ৮৯%।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১৯বারের মুখোমুখিতে ১৮বারই জিতল ব্রাজিল। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ছয়টায় এল সালভাদরের বিপক্ষে আরেকটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল।