সমকামিতার বৈধতা ভারতে, এইডসের ঝুঁকি বাংলাদেশে!
ডেস্ক রিপোর্ট: পশ্চিমা রায় মিললো বাংলাদেশের পাশের দেশ ভারতে। সমকামিতাকে বৈধ বলেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। সমাজ গর্হিত এই কাজে কোনো অপরাধ নয় বলেও রায়ে উল্লেখ করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
রায় নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে খোদ ভারতেই। সমাজবাদী এবং ধর্মীয় নানা সংগঠন রায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। সমকামিতার পক্ষের এই রায়কে দেশটির সমাজ কাঠামোর জন্য ঝুঁকি হিসেবেও বিবেচনা করছেন অনেকে। মরণঘাতি রোগ এইডস-এর বিস্তারেও সহায়ক হবে এই রায়, এমনটি মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এ রায়ে ভাবনা বাড়িয়েছে বাংলাদেশেও। ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা বাংলাদেশের সামাজিক রীতিনীতি এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বহু আগে থেকেই হয়ে আসছে। দু’দেশের মানুষের মধ্যকার আচরণগত মিলও দৃশমান। বাংলাদেশে মরণঘাতি এইডস-এর বিস্তারে যে কয়টি কারণ উল্লেখযোগ্য তার মধ্যে ভারতের সীমান্ত অন্যতম। বিশেষত, পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে এইডস-এর ঝুঁকি বাড়ছে ভারতের সীমানা থেকেই। সীমান্তের স্থলবন্দরগুলোয় যৌনকর্মীদের সঙ্গে অবাধ মেলামেশাই এ ঝুঁকির কারণ বলে বিভিন্ন গবেষণায় ওঠে এসেছে।
সমকামিতা নিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের ব্যাপারে কথা হয় বাংলাদেশের সমাজবিদ ও সাবেক মন্ত্রী ড. মীযানূর রহমান শেলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এই রায়টি বাংলাদেশ তো নয়-ই, ভারতের সমাজ বাস্তবতার সঙ্গেও যায় না। ভারতে এই রায়ের প্রভাব পড়লে, বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়বে। ভারতে এইডস-এর ঝুঁকি বাড়লে বাংলাদেশেও বাড়তে পারে।’
ড. শেলী বলেন, ‘আমাদের সাবধানতার ব্যাপার রয়েছে এখানে। কি হতে পারে, তা এখনই বিবেচনা করতে হবে। তবে ইসলাম প্রধান দেশ হওয়ার কারণে বাংলাদেশে এমন বিধান চালু হবে না বলেই আমার বিশ্বাস। আর ধর্মীয় কারণেই ভারত এবং বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি নিয়ে নানা পার্থক্য রয়েছে।’
‘ভারতবর্ষে সমকামিতা অপরাধ নয়’ একমত হয়ে আজ ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতি। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের আগের রায়ের বিরুদ্ধে যায় এই রায়। একই সঙ্গে ব্রিটিশ আমলের পুরনো আইনটিকে অযৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। রায় শুনিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের মন্তব্য, ‘পুরনো ধ্যানধারণাকে বিদায় জানিয়ে সমস্ত নাগরিকদের সমান অধিকার আমাদের দিতে হবে।’ বিচারপতি দীপক মিশ্রের সঙ্গে সহমত পোষণ করে একই বক্তব্য রেখেছেন অন্য চার বিচারপতিও।
তবে ওই রায়ের কঠোর সমালোচনা করেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। রায়ের পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘সমকামি যৌনতাকে আইনি বৈধতা দেয়া হলে যৌনসংসর্গের ফলে ছড়ানো রোগীর সংখ্যা বাড়বে, বাড়বে এইডস রোগের প্রকোপও।’
একই বিষয়ে কথা হয়, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (ন্যাশনাল এইডস/এসডিসি কন্ট্রোল) ডা. শের মোস্তফা সাদীক খান-এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি ভারতের আদালতের রায় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে সমকামিতা বা যে কোনো বিকৃত যৌনকর্মই এইডস’র জন্য ঝুঁকি বাড়ায়। মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় আমাদের এখানে এমন যৌনকর্মকে কখনই সমাজ বা রাষ্ট্র সমর্থন করবে না। তবে পাশের দেশ ভারতে এইডস’র বিস্তার ঘটলে বাংলাদেশে ঝুঁকি বাড়তেই পারে! উৎস: জাগোনিউজ২৪