সার্কাসে ওমর সানির দুর্দান্ত এই নাচটি দেখেছেন কি…? (ভিডিও)
সার্কাসে ওমর সানির দুর্দান্ত সেই নাচটি দেখেছেন কি…? (ভিডিও)
সার্কাসে ওমর সানির দুর্দান্ত সেই নাচটি দেখেছেন কি…? (ভিডিও)
অন্যরা যা পড়ছেন…
বেশি এইচআইভি ছড়াচ্ছে যৌনতার চেয়ে মাদকেই
সরকারি ও বেসিরকারিভাবে উদ্যোগ নিলেও নির্মূল করা যাচ্ছে না মরণঘাতী রোগ এইডসকে। বর্তমানে দেশে এইচআইভিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার ৭০০। তবে যৌনতার চেয়ে শিরায় মাদক গ্রহণ, সুঁই-সিরিঞ্জ ব্যবহারের মাধ্যমে এই ভাইরাস বেশি সংক্রমিত হচ্ছে। এ ছাড়া অভিবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও এইচআইভি-এইডসে আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছে। এদিকে আজ বিশ্ব এইডস দিবস। প্রতিবারের মতো এবারও দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে এইচআইভিতে আক্রান্তের সংখ্যা, রোগী শনাক্তের হার এবং এইডসে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সাড়ে ৯ হাজার। সেখানে পরের বছর গিয়ে দাঁড়ায় ১১ হাজার ৭০০ জনে। ২০১৫ সালে এইচআইভি এইডসে নতুন করে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৬৯। আর ২০১৬ সালে ৩৭৭ পুরুষ, ১৯০ নারী এবং ১১ হিজড়াসহ মোট ৫৭৮ জন আক্রান্ত হন। ২০১৫ সালে মারা যান ৯৫ জন, ২০১৬ সালে মারা যান ১১১ পুরুষ এবং ৩০ নারীসহ মোট ১৪১ জন। এইডসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৫৮৮ পুরুষ এবং ২২১ নারীসহ মোট ৭৯৯ জন মারা গেছেন।
আরও : বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া স্থগিত মালয়েশিয়ার
চিকিৎসাবিজ্ঞান জানায়, অ্যাকুয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম বা এইচআইভি নামক ভাইরাসের কারণে এইডস রোগ হয়। সাধারণত শারীরিক সম্পর্ক, এইচআইভি সংক্রমিত রক্ত আদান-প্রদান, কারো ব্যবহৃত সুঁই-সিরিঞ্জ ব্যবহারের কারণে ভাইরাসটি ছড়িয়ে থাকে। এ ছাড়া শরীরের কোনো অঙ্গ প্রতিস্থাপন করলে অথবা জীবাণুমুক্ত করা হয়নিÑ এমন সরঞ্জাম দিয়ে দাঁতের চিকিৎসা বা অপারেশন করলেও এইডস আক্রান্ত রোগী থেকে আরেকজনের দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইডস-এসটিডি প্রোগ্রামের (এএসপি) তথ্য অনুযায়ী, শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের ২২ শতাংশের শরীরেই এইচআইভির সংক্রমণ আছে। অর্থাৎ প্রতি পাঁচজনের একজন এইচআইভি সংক্রমিত। অন্যদিকে আক্রান্তদের ৩০ থেকে ৩২ শতাংশই অভিবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্য। অভিবাসী ছাড়াও বিদেশ ভ্রমণকারীদের মধ্যেও এইচআইভি-এইডসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
এএসপির সিনিয়র ম্যানেজার মো. আক্তারুজ্জামান আমাদের সময়কে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে থাকা অভিবাসীদের মধ্যে এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। অভিবাসীদের বাইরের বাকি ৬৮ থেকে ৭০ শতাংশ দেশেই সংক্রমিত হচ্ছে। তারা মূলত শিরায় মাদক গ্রহণ, অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক ও সুঁই-সিরিঞ্জ ব্যবহারের মাধ্যমে আক্রান্ত হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হেলথ পপুলেশন অ্যান্ড নিউট্রেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এইচপিএনএসডিপি) আওতাধীন ন্যাশনাল এইডস-এইচআইভি প্রোগ্রাম (এনএএসপি) এতদিন বিষয়টি নিয়ে কাজ করছিল। ২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৬ সালের জুনে শেষ হওয়া প্রকল্পের মাধ্যমে এইচআইভি-এইডস রোগী শনাক্ত, চিকিৎসা প্রদান ও রোগ সম্পর্কে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এর পরই ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওপর। বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইডস-এসটিডি প্রোগ্রামের (এএসপি) আওতায় এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এএসপির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হয়। বর্তমানে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা জেলার মানুষ। তবে আক্রান্তদের মধ্যে যৌনতার তুলনায় সুঁই-সিরিঞ্জ ব্যবহারকারীই বেশি। কারণ এ দেশের ৩৩ হাজার ৬৮ মাদকসেবীই তা শিরায় গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে ৬১২ জনই এইচআইভি পজিটিভ, যেখানে ঢাকারই ৫৮৯ জন।
এইচআইভিতে আক্রান্তদের এআরভি ওষুধ সেবন করতে হয়। কিন্তু সব রোগী এ ওষুধে আগ্রহী নয়। মূলত এইচআইভি শনাক্ত হওয়ার পর জীবিকার কারণে দেশের বাইরে অবস্থান, কিছু রোগীর ওষুধ গ্রহণে অনিচ্ছা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে তা বন্ধ রাখা, শিরায় মাদক গ্রহণকারী কিছু রোগীকে খুঁজে না পাওয়া এবং একবার ওষুধ খেলে সারা জীবন খেতে হবে এমন ধারণা থেকেই তারা বিরত থাকেন। বর্তমানে মাত্র ১ হাজার ৫৮০ পুরুষ, ৮৮৯ নারী এবং ১৩৪ শিশুসহ মোট ২ হাজার ৪৬৯ রোগী এআরভি সেবন করছেÑ এমন তথ্যই দিয়েছে এএসপি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইডস-এসটিডি প্রোগ্রামের উপপরিচালক ডা. মো. বেলাল হোসেন আমাদের সময়কে বলেনÑ এখন থেকে এনজিও নয়, এইচআইভি-এইডস রোগীদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ সেবা দেওয়া হচ্ছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দেশে বিপুল পরিমাণে মাদক আসছে। মাদক বেশি এলে সিরিঞ্জের ব্যবহারও বেশি হবে। তাই মাদক যাতে কম আসে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে সেক্সচুয়াল ঘটনা ঘটে। সেগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের আওতায় নেই। আবার অনেকে নিজেই এইচআইভিতে সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি জানে না। বিদেশ থেকে দেশে ফেরা লোকদের এইচআইভি ভাইরাস শনাক্তে প্রকল্প নিতে হবে।