সিরিয়ায় ভয়াবহ হামলা, নিহত ২৫০
সিরিয়ার ইস্টার্ন ঘৌওতায় কমপক্ষে ২৫০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। সরকারি বাহিনীর হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে। কয়েক বছরের মধ্যে একে ভয়াবহতম হামলা বলা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের (এসওএইচআর) বরাত দিয়ে আজ বুধবার সিএনএন এ কথা জানিয়েছে।
এসওএইচআর গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় ও বোমাবর্ষণের ইস্টার্ন ঘৌওতায় ভয়াবহ এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। চলমান হামলায় কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ মানুষ আহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৮ শিশু ও ৪২ জন নারী রয়েছেন।
এর আগে সিরিয়ার সরকারবিরোধীদের নেটওয়ার্ক লোকাল কো-অর্ডিনেশন কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার ইস্টার্ন ঘৌওতার দুমা, মিসরাবা ও আল-নাশাইবিয়ায় বিমান থেকে ফেলা উপর্যুপরি বোমায় শতাধিক বেসামরিক লোকের প্রাণহানি ঘটে।
ইস্টার্ন ঘৌওতা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কর অদূরেই। তবে ২০১৩ সাল থেকেই এই এলাকা বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। বিশেষ করে বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থী গ্রুপ এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করছিল। এ এলাকায় প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। জাতিসংঘ বলছে, এর মধ্যে ৯৪ শতাংশ মানুষই সেখানে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। তাদের জন্য ত্রাণসহ মানবিক সব ধরনের সহায়তা প্রয়োজন।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তিন মাসের মধ্যে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম সেখানে কোনো ত্রাণবহর পৌঁছায়। রেড ক্রিসেন্ট ওই ত্রাণ সরবরাহ করে।
ভয়াবহতম হামলা
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গত রোববার থেকে ঘৌওতায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী যে হামলা শুরু করেছে, তাতে শুধু বেসামরিক লোকজনকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে না, হামলার নিশানা বানানো হচ্ছে নিরীহ এসব মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন খাবারের দোকান, গুদাম ও খাদ্য মজুতের সম্ভাব্য জায়গাগুলোতেও।
ত্রাণকর্মীরা বলছেন, ইস্টার্ন ঘৌওতার প্রধান সড়কগুলো নিশানা করে যেভাবে হামলা চালানো হচ্ছে, তাতে যেকোনো সময় ত্রাণ বা উদ্ধার তৎপরতা বন্ধ; এমনকি অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
এ এলাকায় নিহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকার একটি বড় কারণ, হামলা থেকে হাসপাতাল ও চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রও রক্ষা পাচ্ছে না। হামলার শিকার স্থাপনাগুলোর মধ্যে সেখানকার মাতৃত্বকালীন একটি সেবাকেন্দ্রসহ চারটি অস্থায়ী হাসপাতালও রয়েছে।
গত কয়েক দিনের হামলা প্রসঙ্গে ইস্টার্ন ঘৌওতা হাসপাতালের পরিচালক শিশুবিশেষজ্ঞ আমানি বেলোর বলেন, ‘গত পাঁচ বছর ধরে আমরা ঘৌওতায় বিমান হামলা দেখে আসছি। এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু গত কয়েক দিনের এ হামলা আমাদের জীবনে সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা। অল্প সময়ে এত ভয়াবহ হামলা ও প্রাণহানি আমরা আর দেখিনি।’