চিকিৎসক সংকটে সরাইল স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
---
সরেজমিনে দেখাযায় এখানে শিশু রোগ, সার্জারি, মেডিসিন, অবেদনবিদ, গাইনি, দন্ত রোগ , নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ পদগুলো শূন্য রয়েছে। এখানে আবাসিক চিকিৎসকের পদটিও শূন্য ,ভারপ্রাপ্ত দ্বায়ীত্বে রয়েছে ডাঃ আনাস ইবনে মালেক।
সরাইল ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩০ টি। এখানে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে আটজন চিকিৎসক। বাকিরা অনেকেই রয়েছে প্রেষণে, কয়েক জন একেবারে বদলি নিয়ে চলেগেছে। যারা আছেন তাদের মধ্যে অনেকেই ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে ছুটিতে থাকেন। বাকি চিকিৎসকরা পর্যায়ক্রমে রাতে ও দিনে দায়ীত্ব পালন করছেন। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টিতে চিকিৎসক সংকট রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ, চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসকের দ্বায়ীত্বে থাকা ডাঃ আনাস ইবনে মালেক আই এম সি আই কক্ষে প্রতিদিন ৮০-১০০ জন শিশু রোগী দেখেন। উনার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিভাবক গন সেবা পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। আর তিনি এই সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যান। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ২০০-২৫০ রোগী আসে চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীরা।
১২ নভেম্বর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখাযায়, বহির্বিভাগে টিকিট কেটে রোগীরা দুইটি কক্ষের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, চিকিৎসক ভিতর থেকে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। অন্যান্য চিকিৎসকের কক্ষ গুলোতে তালা ঝুলছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিতে আসা বড্ডাপাড়া গ্রামের রিক্সা চালক শামসু মিয়ার স্ত্রী আনু বেগম বলেন (এই হানো আইলে বালা চিকিস্যা পাওন যায়না) এখানে আসলে ভাল চিকিৎসা পাওয়া যায়না চিকিৎসক সংকটের দরুন। আমি আইছি কাশির চিকিৎসা নিতাম কয় বালা ঔষধ নাই, (ছুডু ছুডু গুলি দিছে) ছোট ছোট বড়ি দিছে, (ইতা হাইলে) এইগুলো খাইলে রোগ যাইব স্যার?
দন্ত রোগের চিকিৎসা নিতে আসা তিষা রায় বলেন, এখানে আসলেই বলে একটা এক্সে করে আসেন, আর এখানে হবেনা বিকালে চেম্বারে দেখাবেন। সরকার এতো দামি দামি যন্ত্র পাতি দিয়ে রাখছে এইগুলোর ব্যাবহার হয়না যথাযথ ভাবে। দিনের পর দিন অব্যবহৃত হওয়ার দরুন যন্ত্রপাতি গুলো নষ্ট হচ্ছে।একটা দাঁত ফেলতে গেলেও অনেক সময় কাজ হয়না। হাসপাতালের দন্তরোগ সহকারী প্রায় রোগীদেরকে তার ব্যক্তিগত চেম্বারের ঠিকানা দিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেন কয়েক জন।
আরেক জন অভিযোগ করেন এখানে দাঁত ফেলতে এসে অব্যবস্থাপনা দেখে আমি জেলাশহরে চলে যাই। তিনি বলেন হাসপাতালটিতে (স্টেরিলাইজেশন) বিশুদ্ধ করণ যন্ত্র থাকা সত্ত্বেও ইহা ব্যবহার করা হয় না। সাধারণত প্রাইমারি দাঁত ফেলতে যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয়,এখানে সেই বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়না। যার ফলে রোগীর মাড়িতে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে, কোন একসময় সেইটা ক্যান্সারেও রুপ নিতে পারে।
আর প্রাইভেট হাসপাতালের দালালদের ক্ষপ্পরে পরলেতো কথাই নাই ফুসলিয়ে তাদের হাসপাতালে নেয়ার পায়তারা চলে কাগজ ধরে টানাটানি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডাঃ কাজী আইনুল ইসলাম ডাক্তার সংকটের কথা স্বীকার করেন। এই বিষয়ে উর্ধতন কর্তিপক্ষকে অবহিত করেছেন বলে জানান । তিনি আরো বলেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ একজন যোগদান করেছেন সম্প্রতি।