দুদক পেল আর্মড ইউনিট
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়ক শক্তি হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পেয়েছে পুলিশের ২০ সদস্যের আর্মড ইউনিট।
বৃহস্পতিবার এই ইউনিটের সদস্যরা দুদকে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানের পরই রাজধানী মিরপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেয় চার সদস্য।
দুদক হটলাইন ‘১০৬’ নম্বরে ফোন করে বিআরটিএ কার্যালয়ে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ জানানোর পর দুদক উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে। সঙ্গে ছিলেন আর্মড ইউনিটের চার সদস্য।
দুদক সূত্র জানায়, কমিশনের চাহিদাপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে পুলিশ সদরদফতর থেকে প্রেষণে দুদকে পাঠানো হয় ২০ সদস্যের আর্মড ইউনিট। এর মধ্যে একজন উপপরিদর্শক (এসআই), চারজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও ১৫ জন কনস্টেবল রয়েছেন।
জানা গেছে, আর্মড পুলিশের সদস্যরা রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক ভবন সংলগ্ন ডরমেটরিতে অবস্থান করছেন। তারা ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তল্লাশি, গ্রেফতার, আলামত জব্দকরণ, আসামিদের আদালতে সোপর্দসহ দুর্নীতিবিরোধী সব ধরনের অভিযানে অংশ নেবেন। অভিযান পরিচালনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন কর্তব্যরত আর্মড ইউনিটের সদস্যরা।
দুপুরে ইউনিটের ২০ জন সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুদকে যোগদান করেন। দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী তাদেরকে স্বাগত জানান।
এ সময় মুনীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ থেকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনায় নতুন মাত্রা যুক্ত হলো। দুর্নীতি করে কেউ যাতে পালিয়ে যেতে না পারে—তার জন্য দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। দুর্নীতিবাজদের দমনে কমিশন আর কঠোর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই ও ভারতের সিবিআই-এর মতো নিজ বাহিনী নিয়েই দুদক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুদক আইন আইনে কমিশনের কার্যক্রম পরিচালনায় সব বাহিনী ও কর্তৃপক্ষের দুদককে সহযোগিতা করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
২০১৬ সালের শুরুতে সরকারের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ইকবাল মাহমুদ দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দিয়ে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধ কার্যক্রম জোরদার করতে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরি করেন। এই পরিকল্পনাতেই সশস্ত্র আর্মড ইউনিটের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। আর্মড ইউনিটের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলাদাভাবে চিঠিও পাঠিয়েছিল কমিশন। অবশেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই ২০ সদস্যের ইউনিট প্রেষণে পাঠানো হলো।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিআরটিএ প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালানোর সময় ঘুষখোররা দ্রুত পালিয়ে যায়। অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গা ঢাকা দেন। এ সময় ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতারা দুদক কর্মকর্তাদের কাছে এসে লাইসেন্স, নবায়নসহ নানা কাজে ঘুষ নেওয়া হয় বলে জানান। দুদক দলের অন্য দুজন সদস্য হলেন উপপরিচালক আহমারুজ্জামান ও মাহবুবুর রহমান।