কাইতলা জমিদার বাড়ীর ইতিহাসের এক শৈল্পিক নির্দশন
---
তৌহিদুর রহমান নিটল : নবীনগর উপজেলার নূরনগর এলাকার শত বৎসরের ঐতিয্য ঘেরা কাইতলা জমিদার বাড়ী। আমাদের নতুন প্রজন্ম অনেকেই জমিদার বাড়ী সম্পর্কে জ্ঞাত নয়,আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর পূর্বে কাইতলা জমিদার বাড়ী নির্মান করা হয়েছিল। এই জমিদার বাড়ীটি ছিল ত্রিপুরার রাজা বিরেন্দ্র কিশোর মানিক্যর অধিভূক্ত। আর কাইতলা জমিদারের নাম ছিল বিশ্বনাথ রায় চৌধূরী।
তাঁর ছিল তিন ছেলে তিলক চন্দ্র রায় চৌধূরী, অভয় চন্দ্র রায় চৌধূরী, ঈশান চন্দ্র রায় চৌধূরী। লোকমুখে কথিত আছে যে বিশ্বনাথ রায় চৌধূরী কলকাতার পশ্চিমবঙ্গের শিমগাঁও থেকে এসে কাইতলা বসতি স্হাপন করেছিল,এক সময় জমিদার বাড়ীতে ছিল পায়েলের জমজম সুর ঝরকার,নূপুরের নিক্কন,মায়াবী অট্রহাসির ধ্বনী,পাগলা হাতির সওয়ার,বিচারালয়ের ঘন্টাধ্বনী,পাইক-পিয়াদা ছিল ভরপুর,কিন্তু আজ জমিদারের বিও-বৈভব নেই,নেই কোন ঐতিয্যের জৌলুস,প্রাচীন পাথর শিলালিপি ক্ষয়ে যাচ্ছে,আজ সবই অতীত সবই স্মৃতি,জমিদার আমলে এলাকার কিছু উন্নয়ন চিত্র পরিলক্ষিত হয় স্বচক্ষে দেখলে। অভয় চন্দ্র রায় চৌ: নামানুসারে ‘বল্লভপুর গ্রামের পশ্চিমংশের নাম অভয়নগর,ঈশান রায় চৌ: নামে মেহেরী ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম ‘ঈশান নগর’ এবং তাঁর পুত্র যঁজ্ঞেশ্বর রায়ের নাম অনুসারে ‘কাইতলা যঁজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত,আর যঁজ্ঞেশ্বর স্ত্রী সুখ মনি রায়ের নামে ৪০ একর একটি দীঘির নাম হল ‘সুখ সাগর,জমিদার বাড়ীর পাশে রয়েছে একটি “আন্দা পুকুর”কথিত আছে সেখানে স্বর্ণ-রূপার কলস সিন্দুক কষ্টিপাথর আর গুপ্তধন রয়েছে।
শত বছরেও আন্দা পুকুরটি খনন করা সম্ভব হয়নি,কালো চিকচিক পানিতে সাপে পরিপূর্ন,অনেকে বলে সাপ গুলো নাকি গুপ্তধনের পাহারাদার। আজ কালের বিবর্তনে জমিদারের স্মৃতি চিহ্ন বিলিনের পথে। জমিদার বাড়ী আজ আর কোলাহলে মুখরিত হয়না,সবই যেন শুনশান নিরবতার নিথর নিস্তব্ধ। কিন্তু আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে কাইতলা জমিদার এই বাড়ীটি।