মেঘনায় বিলীন হচ্ছে চাতাল মিলসহ বাড়িঘর
---
বিশেষ প্রতিনিধি : সরাইলে মেঘনা নদীর ভাঙনে বেশ কয়েকটি চাতাল মিল নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সে সাথে বিলীন হয়ে গেছে নদীর তীরবর্তী স্থানে বসবাসকারী বেশ কয়েকটি বসতঘর।
উপজেলার পানিশ্বর গ্রামে গত দুই দিন যাবৎত এ ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে চাতাল মিলসহ বাড়িঘর ভাঙনে আশপাশের লোকজনের মধ্যে বেশ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। সে সাথে বিরামহীন ভাবে ভাঙছে নদীর পাড়। সব মিলিয়ে অনেকটাই দিশেহারা মেঘনা পাড়ের মানুষেরা।
নদীর ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত মিল মালিকরা জানান, গত দুই দিনে তাদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮/১০ কোটি টাকার ক্ষতি মত। আর এতে অনেক মিল নি:স্ব হয়ে একেবারেই পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ও সরাইল উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন জানায়, আষাঢ় মাসের শুরু থেকেই বিরামহীন বৃষ্টির কারণে মেঘানার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে নদীতে রয়েছে প্রচন্ড ঢেউ।
গত শনিবার বিকাল থেকে পানিশ্বর ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামের চাতাল মিল গুলো নদী গর্ভে বিলীন হতে শুরু করেছে।
নদীর করাল গ্রাসে চোখেঁ সামনে ককোটি কোটি টাকার সম্পদ নদী গর্ভে বিলীন চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার নেই জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাতাল মালিকদের।
সরেজমিনে খোজঁ নিয়ে দেখা যায়, জিল্লু মিয়ার পলাশ রাইস মিল, আল-হাবিব রাইস মিল-১ ও আল-হাবিব রাইস মিল-২ নিমিষে বিলীন হয়ে গেছে নদীতে।
দারু মিয়ার খাজা রাইস মিল, নুরু মিয়ার হাজী রাইস মিল ও মজিবুর রহমানের রূপচাহি রাইস মিলের অনেকটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মর্ধ্যে রয়েছে, সুনিল সূত্রধর, হরিদাস সূত্রধর, শঙ্কর সূত্রধর ও দুলাল সূত্রধরের বসতঘর।
তাদের বসত বাড়ি নদী গিলে ফেলেছে। তারা এখন অন্যের বাড়িতে বসবাস করছে। বন্ধ হয়ে গেছে তাদের জীবাকা নির্বাহের প্রধান কাজ মাটি দিয়ে হাঁড়ি পাতিল কলস সহ নানা জিনিসপত্র তৈরির। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত চাতাল মিলের শ্রমিকরা পড়েছে বিপাকে। শত শত শ্রমিকও বেকার হয়ে পড়েছে।
পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মো. দীন ইসলাম বলেন, নদীর ভাঙনের কারণে আমাদের মূল পানিশ্বর গ্রাম প্রায় শেষ। সবশেষ পাল পাড়াটাও নিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর ভাঙনের কারণে আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিতে পারলে আমাদের দুর্ভোগ শেষ হবে না।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মনজুর হোসেন চৌধুরী বেশ কয়েকটি চাতাল মিল ও পাল পরিবারের ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। এর প্রধান কারণ হিসেবে নদীতে খাড়া ভাবে বালু ফেলে ভরাট করে মিল তৈরী করায় নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে এ ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে।
আমি নির্বাহী প্রকৌশলী মহোদয়কে নিয়ে আবারও ওই জায়গা পরিদর্শন করব। প্রতিবেদন তৈরি করব। সেখানে স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার সকল চেষ্টা করা হবে।