রাষ্ট্রপতির গাড়িবহর থামিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যেতে দেওয়ায় পুরস্কার
---
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স আগে যাওয়ার রাস্তা করে দিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির গাড়িবহর থামিয়ে দিলেন বেঙ্গালুরু প্রদেশের পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক। গত শনিবার তথ্যপ্রযুক্তি নগরীর ট্রিনিটি সার্কেল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিমানবন্দর থেকে রাজভবনের দিকে যাওয়ার কথা রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কনভয়। ব্যস্ত রাস্তায় মসৃণভাবে পথ করে দিতে হবে। সে ভাবেই প্রস্তুত ছিলেন উপ-পরিদর্শক এমএল নিজলিঙ্গাপ্পা ও বিশ্বনাথ রাও। কনভয়ের পাইলট কার তখন চলে এসেছে কয়েকশো মিটারের মধ্যে। এরই মধ্যে ভিড়ের রাস্তায় পথ করে নিয়ে কাছের হাসপাতালটিতে পৌঁছতে চাইছে একটি অ্যাম্বুলেন্স। ৩৮ বছরের অভিজ্ঞতা। পুরোটা দেখে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কয়েক মুহূর্তের বেশি নেননি নিজলিঙ্গাপ্পা। দ্রুত হাত তুলে দেন পাইলট কারের দিকে! পাশে দাঁড়ানো নবীন সহকর্মী, ট্রাফিক কনস্টেবল বিশ্বনাথ রাও-ও বাড়িয়ে দেন সহযোগিতার হাত। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেখান দিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সটি। থামতে হয়নি রাষ্ট্রপতির কনভয়কেও।
শনিবারের এই ঘটনা হয়তো আর সবার অগোচরেই থেকে যেত। ডিজিটাল যুগে ভিভিআইপি সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার এই ঘটনা সকলের নজরে চলে আসে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। দ্রুত বেঙ্গালুরুবাসীর হৃদয় জিতে নেন নিজলিঙ্গাপ্পারা। দুই ট্রাফিক পুলিশের প্রশংসায় টুইটার-ফেসবুকে উচ্ছ্বসিত বহু মানুষ। সবারই এক রায়, ঠিক সময়ে ঠিক কাজটিই করেছেন এই দুজন। কেউ লিখেছেন, ‘ভারতের মতো দেশে এটা এক বিশাল সিদ্ধান্ত।’ কারও টুইটে প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রতিধ্বনি, ‘প্রত্যেক ভারতীয়ই ভিআইপি।’ অনেকে মনে করিয়ে দেন, ভিআইপি-র কনভয়ে আটকে অতীতে রোগীর মৃত্যুও হয়েছে। ঠিক আচরণের জন্য পুরস্কৃত করা উচিত এই দু’জনকে।
জনতার রায়কে মর্যাদা দিতে দেরি করেননি বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার প্রবীণ সুদ। তিনি জানিয়েছেন, এমন ডিউটিতে সাধারণত উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদেরই রাখা হয়। সে দিন তার সুযোগ ছিল না। কিন্তু নিজলিঙ্গাপ্পা ও রাও ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। এবং সময় মতো কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছেন। পুলিশ কমিশনারের কথায়, ‘আমরা ওদের কাজের প্রশংসাই শুধু করছি না, তাদের নগদ পুরস্কারও দেওয়া হচ্ছে। এতে গোটা বাহিনীর কাছে এই বার্তা যাবে যে, এটা ঠিক কাজ।’