শুক্রবার, ৩০শে জুন, ২০১৭ ইং ১৬ই আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

‘রাজপরিবারের নির্দেশেই ডায়নাকে খুন করেছি’

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ২০, ২০১৭
news-image

---

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘আমি ডায়নাকে খুন করেছি’, মৃত্যু পথযাত্রী এক ব্রিটিশ গুপ্তচরের মুখের এই কয়েকটা মাত্র শব্দ। কিন্তু তাতেই তোলপাড় সারা বিশ্ব। ব্রিটিশ যুবরানি ডায়না। প্রিন্সেস অফ ওয়েলস। তাই শুধু হার্টথ্রব বললেও কম বলা হয়। ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্টে মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তিনি।

দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি ডায়নার, ব্রিটেনের রাজপরিবারের নির্দেশে তাঁকেই হত্যা করেছেন জন হপকিন্স। মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যুশয্যায় দাবি করলেন এই ব্রিটিশ গুপ্তচর স্বয়ং। লন্ডনের একটি হাসপাতাল থেকে দিনকয়েক আগে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। বার্ধক্যজনিত কারণে খুব বেশিদিন আর পৃথিবীতে নেই তিনি। ১৯৭৩–১৯৯৯ সালের মধ্যে ২৩টি গুপ্তহত্যায় তিনি জড়িত ছিলেন বলেও জানান এই এমআই–৫ এজেন্ট। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লেডি ডায়নার ‘হত্যা’। রাজপরিবারের নির্দেশ অমান্য করার সাধ্য কারও ছিল না।

পাপারাজ্জিদের হাত থেকে বাঁচতে দ্রুতবেগে গাড়ি চলার ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্যারিসের একটি টানেলেই দুর্ঘটনার শিকার হন যুবরানি। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তাঁর দেহরক্ষী ও চালক। অনেকেই বলেন, গাড়ি চালক পল মদ্যপ ছিলেন, তাই দুর্ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকটি বিতর্কিত ওষুধও মেলে পলের ময়নাতদন্তে। কিন্তু আসলে সেসব কিছুই নয়, সবটাই সাজানো, দাবি করছেন হপকিন্স।

দুর্ঘটনার পরই ডায়নার দেহরক্ষীর বাবা অভিযোগ করেছিলেন, রাজপরিবারের ষড়যন্ত্রের কারণেই খুন হন যুবরানি। দুর্ঘটনা আসলে সাজানো। কিন্তু মেলেনি প্রমাণ। বহু বছর ছিলেন জন ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রশিক্ষণও রয়েছে। মৃত্যু ও ধ্বংসের ব্যাপারে তাঁর চেয়ে ভাল আর কেইবা জানেন। রাসায়নিক কিংবা বিষবিজ্ঞান তাঁর নখদর্পণে। তাই যুবরানিকেও সরিয়ে দেওয়ার মূলচক্রীও তিনিই, জানিয়েছেন হপকিন্স।

আশি বছরের এই ব্রিটিশ নাগরিকের দাবি, এমআই–৫ প্রতিনিধিরা নিঃশব্দে কাজ সেরে ফেলত। তাই জনসমক্ষে তাঁদের কেউ দেখেনি। সাতজন ‘হত্যা’ বিশেষজ্ঞের অন্যতম ছিলেন তিনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মীকেই খুন করেছেন তিনি। তবে, প্রিন্সেস ডায়নার ব্যাপারটা আলাদা। “ডায়নাই একমাত্র মহিলা যাঁর মৃত্যুর পিছনে ছিলাম আমি,” জানান হপকিন্স। ডায়নাই একমাত্র অভিজাত পরিবারের সদস্য যাঁকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন হপকিন্স। রাজপরিবারের নির্দেশেই এই কাজ করেছিলেন তিনি।

ডায়নার হত্যা তাঁর কাছে বেশ একটা পরস্পরবিরোধী ব্যাপার ছিল। একে তুখোড় বুদ্ধিমতী আর চোখ ঝলসানো রূপ। কিছুতেই জন তাঁকে মারতে চাননি, তবে রানি ও দেশের কথা ভেবেই ডায়নাকে মেরে ফেলতে হয়েছিল। কিন্তু কীভাবে তা ঘটেছিল তা জানাননি হপকিন্স। কারণ দেশের চাইতে বড় কিছু তো নেই। আর প্রিন্স ফিলিপের নির্দেশ কীভাবে অগ্রাহ্য করবেন তিনি। তাই সরিয়ে দিতেই হয় ডায়নাকে। ডায়নার খুব রাগ ছিল অভিজাত বংশের অনেক কথাই প্রকাশ্যে বলে দিতে চাইতেন তিনি, তাই রাজপরিবার তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়নি। খুব সযত্নে সাজিয়ে-গুছিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবেই খুন করা হয় ডায়ানাকে। সংবাদ প্রতিদিন

এ জাতীয় আরও খবর