বাংলাদেশ ‘বিপদজনক’ দল আর ভারত ‘ফেবারিট’
---
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে আজ (বৃহস্পতিবার) ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। র্যাংকিংয়ের দিক থেকে ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামবে ভারত তবে জয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তরা। বাংলাদেশের জন্য প্রথমবারের মতো অপেক্ষা করছে ফাইনালের হাতছানি। এ পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ অন্তত ৩২টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। এরমধ্যে ২৬টি ম্যাচে জয় পেয়েছে ভারত। কিন্তু বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরমেন্সে অনেকটাই আশা সঞ্চার করেছে সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু দলীয় শক্তির বিচারে কে কতটা এগিয়ে?
বিবিসি বাংলার সাথে এক সাক্ষাৎকারে ভারতের ক্রিকেট ভাষ্যকার বড়িয়া মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ গত দু’বছরে যতটা উন্নতি করেছে তাতে বলতেই হবে ভারত-বাংলাদেশ সেমিফাইনাল ম্যাচটি যথেষ্ট কঠিন হবে। যদিও ভারত ফেভারিট হিসেবে এগিয়ে। দলটি এর আগে বহু আইসিসি টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে উঠেছে এবং চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বাংলাদেশের কাছে সেমিফাইনাল সিচুয়েশন একেবারেই নতুন। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডকে যেভাবে হারিয়েছে, যেভাবে গত দু’বছরে উন্নতি করেছে, ২০১৫ সালের ওয়ার্ল্ড কাপে ভারতে সাথে খেলেছে এই সব মিলিয়ে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি হাড্ডাহাড্ডি খেলা হতে যাচ্ছে। যদিও ভারত কিঞ্চিত এগিয়ে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শক্তি কোথায় বলে আপনি মনে করেন?
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং-বোলিং দুদিকেই যথেষ্ট ভারসাম্য রয়েছে। সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল এই সব মিলিয়ে ব্যাটিং যথেষ্ট শক্তিশালী। আবার বোলিংয়ের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, শাকিব আল হাসান, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মাশরাফি এবং মোস্তাফিজুর রহমানসহ যারা আছেন তারাও যথেষ্ট। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ যথেষ্ট ভারসাম্য সম্পন্ন দল। কিন্তু সব মিলিয়ে ম্যাচটি নির্ভর করবে প্রেসারের ওপর। যে টিম ‘ বেটার প্রেসার’ নিতে পারবে সে দলই ভাল করবে।
বাংলাদেশ দলের দুর্বলতার যায়গাগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে বড়িয়া মজুমদার বলেন, মূলত প্রেসার নিতে পারা একটি দক্ষতা। বাংলাদেশ আগে কোনদিন আইসিসি সেমিফাইনাল খেলেনি। সেদিক থেকে তাদের দুর্বলতা আছেই। এই ধরণের ম্যাচে তারা নার্ভটা রাখতে পারবে কিনা এবং সেটাতে প্রতিপক্ষ কতোটা আঘাত করতে পারবে সেটি দেখার বিষয়। সেক্ষেত্রে যদি দুই-তিন উইকেটর পতন হয় তখন সেই চাপ সহজ করে নিতে পারবে কিনা সেটিও বড় বিষয়। আমার মনে হয় ভারত মানসিক দিক থেকে শক্তিশালী দল কিন্তু সেখানে বাংলাদেশের অবস্থানও যথেষ্ট।
অন্যদিকে ভারতে শক্তির যায়গা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারত চারদিকে শক্তিশালী। ভারতের ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সবই দুর্দান্ত। তাদের টিমে কোন কমতি নেই। তারা আগে আইসিসি টুর্নামেন্টও জিতেছে। সর্বোপরি ভারতে কোন দুর্বলতা নেই। তবুও বাংলাদেশকে হেলায় দেখার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু ভারত যদি তার নিজেদের ফর্মে খেলতে পারে তাহলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। এখন ভারতকে তার ফর্মে খেলতে না দেয়াই বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।
বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাচে দর্শকদের মধ্যে বাড়তি উত্তেজনা দেখা যায়। সে উত্তেজনা ক্রিকেট বোদ্ধাদের কতটা স্পর্শ করে?
তিনি বলেন, যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। সারা পৃথিবীর মনুষের আগ্রহ রয়েছে। ঢাকা-ইন্ডিয়া-বার্মিংহামসহ বিভিন্ন যায়গায় বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। এ ম্যাচটি বড় একটি ম্যাচ, যার ফলে চারদিকে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।