মঙ্গলবার, ২০শে জুন, ২০১৭ ইং ৬ই আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

রাজধানীতে ১০০ টাকায় সুখ বিক্রি করে তারা

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ১২, ২০১৭
news-image

---

নিউজ ডেস্ক : ‘১০০ টাকা দে, সাপের খাবার কিনব, তুই অনেক সুখ পাবি।’ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এভাবে সুরে সুরে কথা বলে মানুষকে টাকা দিতে বাধ্য করছে বেদেনীরা। রিক্সা কিংবা চলন্ত মানুষের পথ আগলে হরহামেশাই ঢাকার অলি-গলিতে এমন কথায় চাঁদা তুলছে বেদেনীরা।

গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে সিঙ্গা লাগানো, দাঁতের পোকা তোলা, তাবিজ বিক্রি, সাপের কাটা রোগীর চিকিৎসা ও সাপ খেলা দেখানো ছিল বেদেনীদের একসময়ের কর্মকাণ্ড। সাপের খেলা দেখিয়ে আর নানা কথায় ওষুধ বিক্রি করে চলতো ওদের সংসার। বিনাশ্রমে আয়ের লোভে এরা গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হয়েছে। মানুষকে সাপের ভয় দেখিয়ে পথ আগলে চাঁদা আদায়ই যেন এ শ্রেণির পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব কাজের কারণে বিপজ্জনক ও মানুষের অতিষ্ঠতা বাড়াছে বেদেনীদের ওপর। অনেক সময় বেদেনীদের ওপর অতিষ্ঠ হয়ে মারধরের ঘটনাও ঘটছে।

বেদেনী মুক্তার ভাষায়, ‘এই কাজ ছাড়া আমরা কী করুম। আমগরে কে কাজ দিব। কাজের লাইগা গেলে অনেকে ইজ্জতে হাত দেয়। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি বইলা আমগরে খারাপ মাইয়া মনে করে। আমগর কী পেট নাই? খাওন লাগে না? কেউ কাজ দেয় না, খালি উল্ডা- পাল্ডা কথা কয়।’

মানুষের পথ আগলে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে মুক্তা বলে, ‘কামটা (কাজ) খারাপ ঠিকই, কিন্তু আর কাম তো পাই না।’

এক ভুক্তভোগী জানান, ‘সকালে অফিসে যাওয়ার পথে একদল বেদেনী পথ আগলে ধরে, দশ টাকা দিলাম তারা নেবে না, মানিব্যাগটা হাতে থাকায় মানিব্যাগে ওরা নিজেরাই হাত দিয়ে একশত টাকা নিল। পথচারীরা শুধু তামাশা দেখল অনেকে ওদের ভয়ে পাশকেটে চলে গেল। ব্যাপারটা আসলেই বিরক্তিকর।’

জানা যায়, বেদেনীর দল দেখলেই অনেকেই আতঙ্কে পড়েন। পাশকেটে যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রথমে বেদেনীর স্বাভাবিক আচরণ করলেও পরবর্তীতে তারা টাকা নিয়েই পথ ছাড়েন। কথনও গায়ে হাত বুলায়, অথবা সাপ গায়ে তুলে দিয়ে ভয় দেখায়, এতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই পথচারীরা টাকা দিয়ে নিজেকে মুক্ত করেন।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী এদের সংখ্যা প্রায় ৬৩ লাখ। যার মধ্যে দলিত ৪০ লাখ। বেদে আট লাখ ও হরিজন ১৫ লাখ।

এ জাতীয় আরও খবর