বাজেট উন্নয়ন ও গণমুখী : ১৪ দল
---
বিশেষ প্রতিনিধি : জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০১৭-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে উন্নয়ন, গণমুখী ও জনবান্ধব হিসেবে আখ্যায়িত করে তাতে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল।
বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনের পর আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হচ্ছে, এ বাজেটের মাধ্যমে সেই ধারবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। উন্নয়নের ধারবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য প্রস্তাবিত বাজেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এদিকে চলতি বছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে গণমুখী ও উন্নয়নমূলক হিসেবে উল্লেখ করে এবং অভিনন্দন-স্বাগত জানিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ বাজেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে আরো গতিশীল করবে।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাই অর্থমন্ত্রীকে, যিনি এই বয়সেও দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা সংসদে বক্তব্য রেখে জাতিকে বিশাল অঙ্কের বাজেট উপহার দিয়েছেন। অত্যন্ত সফল ও দক্ষ অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় যেভাবে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশে পরিণত হয়েছে। সংসদে উত্থাপিত এ বাজেট বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি সৃদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে সহায়ক হবে।’
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের দিকে লক্ষ্য রেখে বাজেটে অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে, ব্যবসায়ীদেরও অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এই বাজেট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে অর্থনীতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে মোহাম্মদ নাসিম আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের এই অগ্রযাত্রা বেগবান করতে অত্যন্ত জনবান্ধব এ বাজেট বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে ১৪ দল।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দলের মুখপাত্র মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, এ বাজেট গণমুখী ও উন্নয়নমুলক। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে একটি যুগোপযোগী উন্নয়নমূলক বাজেট দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক টিপু মুন্সি বলেন, ‘উন্নয়নের জন্য এটি একটি পজেটিভ বাজেট। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি জনবান্ধব বাজেট তৈরি করা হয়েছে। দেশের উন্নয়নের কথা ভেবে একটি সাহসী বাজেট দেয়া হয়েছে যার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেট দিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। এ বাজেটে জনগণের কল্যাণ ও দেশের অগ্রগতি নিহিত রয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের কল্যাণ সাধিত হবে।’
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রস্তাবিত বাজেটকে ইতিবাচক আখ্যায়িত করে বলেন, গণমুখী এ বাজেট দেশকে শিল্পায়িত করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। স্বাধীন অর্থনীতি বিকাশের ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে গণমুখী ও উন্নয়নমূলক বাজেট দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে রাজধানীতে মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট, জিরোপয়েন্ট হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় সেখানে আয়োজিত এক সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের এই বাজেটকে উন্নয়ন ও জনকল্যাণমুখী বাজেট হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এই বাজেট জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাবে।
শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ বের করে আনন্দ মিছিল। শ্রমিক বান্ধব, শিক্ষা বান্ধব, উন্নয়নমুখী মেগা বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। বিকাল ৫টায় একযোগে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা, মহানগর, উপজেলা, কলেজ, থানা ও পৌর শাখায় আনন্দ মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনন্দ মিছিলটি বিকাল ৫টায় শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাজু ভাস্কর্যে এসে সমাবেশ পরিণত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।
গণমুখী, উন্নয়নমুখী ও যুব বান্ধব বাজেট দেয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করে যুবলীগ। যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে বের হওয়া আনন্দ মিছিলটি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থেকে শুরু হয়ে জিপিও-পল্টন মোড় হয়ে পুনরায় যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ মিছিলে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।
প্রস্তাবিত বাজেটকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁতী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী এবং সাধারণ সম্পাদক খগেন্দ্র দেবনাথের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মিছিলটি বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে শুরু হয়ে জিরো পয়েন্ট হয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।