ঘূর্ণিঝড় মোরা : সন্ধ্যার আগেই জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশ
---
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ এগিয়ে আসায় সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলীয় জেলাগুলোর নিচু এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। উপকূলীয় ১৯ জেলায় ইতোমধ্যে এলাকায় প্রস্তুতি সভা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বিভিন্ন জেলায় দুপুর থেকেই মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার সচিবালয়ে এক জরুরি সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিবের দায়িত্বে থাকা এ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা বলেন, “স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার ব্যবস্থা করতে। সন্ধ্যার আগেই তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হবে।”
তবে কত মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে, সে সংখ্যা জানাতে পারেননি কর্মকর্তারা।
গোলাম মোস্তফা বলেন, “জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সবাই সতর্ক আছেন। উপদ্রুত এলাকার মানুষের জন্য চাহিদা অনুযায়ী সকালেই খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খাদ্যের কোনো সমস্যা হবে না।”
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটককে বলেন, উপকূলীয় জেলাগুলোতে ইতোমধ্যে মেডিকেল টিম গঠন এবং বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এর বাইরে প্রায় ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ত্রাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শুকনো খাবার ও খাবার পানি প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।
ঝড়ের সর্বশেষ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।আর উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার বিকাল থেকে উপকলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোর উপকূল অতিক্রম করার সময় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
মোহাম্মদ হাশিম বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি আমরা সব সময় ফলো করছি, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসে তা আপডেট করছি। এ অবস্থায় দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।”
তিনি জানান, প্রত্যেক জেলা-উপেজেলায় সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন অধিদপ্তর এবং বিভাগেও আলাদা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
** দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর: ৯৫৪০৪৫৪, ৯৫৪৫১১৫, ৯৫৪৯১১৬ ও ০১৭১৫১৮০১৯২।