মঙ্গলবার, ১৩ই জুন, ২০১৭ ইং ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফ্লাইওভার নির্মান হতে আর কতদিন! আঁকা-বাঁকা রাস্তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ২০, ২০১৭

---

তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের যানজট নিরসনে রেললাইনের উপর দিয়ে ফ্লাই ওভার নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে। যদিও চলতি বছরের জুন মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু অবকাঠামো সম্প্রসারণ জনিত জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজের সময়সীমা আরো ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের মাত্র ৬০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়াজ মোহাম্মদ স্কুল মাঠে আসলে জনগণের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে রেল লাইনের ওপর ওভারপাস নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রকল্পের আয়তন ধরা হয় শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল খ্রিস্টীয় মিশন এলাকা থেকে কালীবাড়ি মোড় পর্যন্ত ৭’শ ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৭ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থ। আর প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭৯ কোটি টাকা। ফ্লাইওভারটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ অধীনে বাস্তবায়ন হচ্ছে৷ কিন্তু ফ্লাই ওভার সরঞ্জাম রাস্তার দু-দিকে রাখার কারণে আর উচূঁ-নিচু গর্তে ভরা সড়কে যান চলাচলের সময় যাত্রীরা প্রাণ ভয়ে ভীতস্থ থাকেন। আর এ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকার ব্যবসায়ীদের তো ব্যবসা একেবারে লাটে উঠেছে। পুঁজি হারিয়ে কেউ কেউ দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দোকান মালিক জানান, এই ফ্লাইওভার এতো দীর্ঘ সময় নিয়ে কাজ হচ্ছে যা আমাদের পথে বসার মত হয়েছে। নির্মাণ কারী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আর লোকবলের যে ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে জানিনা এর শেষ কখন হবে। তারা আরো বলেন এক দিকে ফ্লাইওভারের কাজ, অন্যদিকে রাস্তার করুণ অবস্থা, সব মিলিয়ে আমরা দিশেহারা। কয়েকজন ভবন মালিক জানান, ফ্লাইওবারের নীচে সড়ক ও জনপথের সড়ক পূর্বদিকে রাস্তা প্রশস্থ করার জন্য আমাদের জেলা পরিষদ আমাদের লিজ বাতিল করে জায়গা নিয়ে গেলেও অনেকেই স্থায়ী ইমারত তৈরী করে সরকারী জায়গা দখল করে রেখেছে। এতে করে সোজা রাস্তাটি অনেকটাই বাঁকা হয়েছে। আমরা জেলা পরিষদের কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি পূর্বদিকে রেলওয়ে ক্রসিং থেকে কালিবাড়ি পর্যন্ত একনো যারা জেলা পরিষদের খাস জায়গা দখল করে স্থায়ী ইমারত তৈরী করেে রেখেছ সেগুলো যেন অচিরেই পুনরুদ্ধার করে শহরের যানজট নিরসনে রাস্তা প্রশস্থ করা হয়। শফিক মিয়ার নামক একজন পথচারী বলেন, চোখেঁ পড়ার মত বিষয় হলো জেলা পরিষদ তাদের দুপাশে সরকারি জায়গা যতটুকু খালি করে সড়ক বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়েছে তা আবার ক্ষেত্র বিশেষে আকাঁ-বাকাঁ যা আমাদের অনেকের নজর কেড়েছে। তাই এত কিছুর মাঝে ওভারপাসের ভবিষ্যৎ নিয়েও আমাদের জনমনে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাই শহরবাসী ও বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ মহলের প্রশ্ন- কবে নির্মাণ হবে ওভারপাস, কবে যানজটমুক্ত হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর আর মানুষের দুর্ভোগ লাগবের সেই কাঙ্গিত ফ্লাই-ওভার।
এ ব্যপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম (এম এস সি) বলেন, জেলা পিরষদের জায়গা যেখানে অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে সেগুলো অবশ্যই পুনরুদ্ধার করা হবে। ইতোমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু এহেতশাদ রাশেদ বলেন, আগামী ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসের মর্ধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী। তবে বৃষ্টির কারণে রাস্তা উচূঁ-নিচু থাকায় জনদূর্ভোগ বেড়েছে। আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বলেছি মালামাল সহ রাস্তা পরিষ্কার রাখার জন্য। জেলা পরিষদ আমাদের জায়গা বুঝিয়ে দিলে রাস্তা আরো চওড়া করতে পারব।

এ জাতীয় আরও খবর