ভারত থেকে আনা অর্থ ভোগ করবে দেশবাসী : আ.লীগের সভায় প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত সফরে তার সরকারের সাফল্য অন্ধের মতো অস্বীকার করে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভারত থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ইউএস ডলার লাইন অব ক্রেডিট এনেছি মাত্র ১ শতাংশ সুদে। আমরা ধার এনেছি এ টাকা। এ অর্থ দিয়ে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ, এলএনজি, এলপিজি, ডিজেল আমরা ক্রয় করব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন এটাকেও যদি বলা হয় যে কিছুই পায় নাই তাহলে ভাবখানা এমন যে, আমরা ভিক্ষা চাইতে গিয়েছিলাম, যে কিছুই পায়নি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার রাতে গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বকে খালেদা জিয়া বলেছেন ‘বায়বীয় বন্ধুত্ব’। তিনি প্রশ্ন তোলেন আমার ভারত সফর, এর আগে নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর, তারও আগে মনমোহন সিং সফর করে গেলেন, ভারতীয় সংসদে ল্যান্ড বাউন্ডারি চুক্তি অনুমোদিত হলো, কার্যকর হলো-এসব কি তাহলে বায়বীয়? প্রধানমন্ত্রী বলেন, বায়বীয় বলতে খালেদা জিয়া কি বোঝাচ্ছেন তার ব্যাখ্যাটা যদি জাতির কাছে দিতেন। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন আমার এই সফরের মধ্য দিয়ে দেশবাসী নাকি কিছুই অর্জন করতে পারে নাই! এটাও খালেদা জিয়ার বক্তব্য। এই যে আমরা বিদ্যুৎ, গ্যাস, এলএনজি, ডিজেল, ৪ দশমিক ৫ বিলিয়নের লাইন অব ক্রেডিট, ডিফেন্স সামগ্রী কেনাকাটায় ৫ শ’ মিলিয়ন ডলার নিয়ে আসলাম। এটা কার কাজে লাগবে, সবই দেশ এবং দেশের মানুষের কাজে লাগবে। এগুলো আমি নয়, দেশবাসী ভোগ করবে।
দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সকল সদস্যের উপস্থিতিতে সভার শুরুতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সফল ভারত সফরের জন্য সংগঠনের কার্যনির্বাহী সংসদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
ভাষণে শেখ হাসিনা-পঁচাত্তর পরবর্তী মোস্তাক-জিয়ার অবৈধ সরকার গঠন থেকে শুরু করে বিএনপি’র বিভিন্ন চুক্তি এবং এমওইউ স্বাক্ষরসহ সীমান্ত চুক্তি এবং ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা চুক্তি কার্যকরে পঁচাত্তর পরবর্তী সরকারগুলোর ব্যর্থতা, তিস্তা নদীর উৎপত্তিস্থল গজলডোবায় ভারতের একতরফা ব্যারেজ নির্মাণে জিয়াউর রহমানের বাধা না দেওয়াসহ শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য ধরে উত্তর দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা ভারতের কাছ থেকে ৬ শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় করেছি। এই ধারায় মোট ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিভিন্ন কিস্তিতে ভারত থেকে সংস্থান করেছি। ভুটান এবং নেপালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে সেখান থেকেও বিদ্যুৎ আনছি। যা দেশবাসীর কল্যাণেই লাগবে। এগুলো দেশবাসীরই অর্জন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি প্রদানের ঘোষণা দিয়েছি বলেই ওনার গায়ে জ্বালা ধরে গেছে।’ তিনি বলেন, ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর কওমি মাদ্রাসা, ৭৫ হাজার কওমি মাদ্রাসা আমাদের দেশে। ৬টি তাদের বোর্ড তাদের কারিকুলামের কোনো ঠিক নেই। সবাই নিজে নিজের মতো কারিকুলাম তারা ব্যবহার করেন। এখানে কোনো সরকারি স্বীকৃতি ছিল না। যে কারণে এই সার্টিফিকেট নিয়ে তারা উচ্চশিক্ষাসহ দেশ বিদেশে লেখাপড়া বঞ্চিত ছিল, কাজ পেত না, চাকরি পেত না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ যাতে অন্ধকারাচ্ছন্ন না হয় সে জন্যই আমি সরকারের আসার পরই তাঁদের আলেম-ওলামাদের নিয়ে দীর্ঘদিন বৈঠকের পর এখন তারা একটা সমঝোতায় এসেছে।…এখানে তার দুঃখটা কিসের?
‘বিদেশে তার বন্ধু আছে, প্রভু নাই, ’ খালেদা জিয়া এই বক্তব্যের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, কেমন বন্ধু আছে তাও আমরা জানি। ২০০১ সালে যখন গ্যাস বিক্রির প্রশ্ন উঠল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের কাছে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। আর আওয়ামী লীগ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।