তিস্তা চুক্তি ঝুলিয়ে রেখে অন্য চুক্তি করা হয়েছে
জাতীয় পার্টি, সিপিবি-বাসদ ও জেএসডিসহ সাতটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা চুক্তির কথা বলা হলেও তিস্তা চুক্তি ঝুলিয়ে রেখে অন্য চুক্তি করা হয়েছে। তবে আমরা এখনো আশা ছাড়িনি। তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে। কিন্তু তিস্তা নদীসহ দেশের ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার কিছুই হয়নি।
রোববার জাপা, সিপিবি, বাসদ ও জেএসডি’র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এ প্রতিবেদকের এসব প্রতিক্রিয়া জানান।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, দেশের মানুষ আশা করেছিল তাদের কাঙ্খিত তিস্তা চুক্তি হবে, কিন্তু হয়নি। তবে আমরা এখনো আশা ছাড়িনি। তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা চুক্তির কথা বলা হলেও তিস্তা চুক্তি ঝুলিয়ে রেখে অন্য চুক্তি করা হয়েছে। উত্তর বঙ্গের মানুষের জীবন-মরণ সমস্যা তিস্তা চুক্তি হওয়া খুবই জরুরি।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় চুক্তির কিছুই হয়নি। ভারত তাদের প্রয়োজনীয় চুক্তি করে নিয়েছে। কিন্তু তিস্তা নদীসহ দেশের ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার কিছুই হয়নি। বাংলাদেশের অধিকারের ব্যাপারে তাচ্ছিল্য করেছে ভারত।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, জনগণের মতামত নিয়ে চুক্তি করতে হয়। কিন্তু সরকার জনগণের মতামত না নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। অথচ দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত তিস্তা চুক্তি করতে পারেনি।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, হাসিনা-মোদির চুক্তির মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার চুক্তির কোনটাই হয়নি। বাংলাদেশ কেবল আশা ও আশ্বাসের মধ্যে সন্তষ্ট থাকতে হচ্ছে। এছাড়াও কাঙ্খিত তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর ন্যায্য পানির হিস্যারও সমস্যার সমাধান হয়নি।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, বাংলাদেশের জনগণের কাঙ্খিত তিস্তা চুক্তির প্রতিফলন ঘটেনি। এ চুক্তির ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে যেসব চুক্তি হয়েছে-এসব চুক্তির মধ্যদিয়ে দেশের জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণের কিছু নেই।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সভাপতি বদরুদ্দীন উমর ও সম্পাদক ফয়জুল হাকিম এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পাদিত ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং ৬২ দফা যৌথ ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়া ভূ-রাজনীতিতে ভারতের আধিপত্য বিস্তারের সঙ্গে এই চুক্তি ও সমঝোতার সম্পর্ক রয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বঙ্গোপসাগর-ভারত মহাসাগর-আরব সাগরকে ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের যে যুদ্ধ জোট ও পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারকের নামে ভারত বাংলাদেশকে তার সঙ্গে যুক্ত করলো। এর ফলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
নেতৃবৃন্দ ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তিসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন প্রভৃতির সঙ্গে সম্পাদিত প্রতিরক্ষা চুক্তি/নিরাপত্তা সংলাপের জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানান।