বুধবার, ৫ই এপ্রিল, ২০১৭ ইং ২২শে চৈত্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

জঙ্গি আস্তানায় নিহত ৬ জনই দিনাজপুরের

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ৩, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : মৌলভীবাজারের নাসিরপুরে জঙ্গি আস্তানায় আত্মঘাতী সাত জনের মধ্যে ছয় জনই দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের।

সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানকালে সপরিবারে আত্মঘাতী মোশারফ ওরফে সোহেল রানার প্রকৃত নাম লোকমান হোসেন। স্থানীয় থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসরাইল হোসেন বলেন, পুলিশ আগে থেকেই লোকমানের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি জানত।

জঙ্গি আস্তানায় লোকমান আলী, তার স্ত্রী শিরিনা আক্তার, মেয়ে আমেনা খাতুন, সুমাইয়া আক্তার, ফাতেমা ও মরিয়ম আত্মঘাতী হন। সংবাদ মাধ্যমে নিহতদের বিবরণ দেখে ও ঘটনার আগের দিন মোবাইলে কথা বলার মাধ্যমে লোকমানসহ নিহত ছয়জনের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের স্বজনরা মরদেহ নেবে না বলেও পুলিশকে জানিয়েছে।

নারী জঙ্গি শিরিনা আক্তার ২৯ মার্চ তার মা জোবায়দা ও বাবা আবু বক্করের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। তখন শিরিনা বলেন, তোমাদের সঙ্গে এই দুনিয়ায় আর দেখা হবে না। হাসরের ময়দানে দেখা হবে। বাবা-মা তখন তারা কোথায় আছে জানতে চাইলে শিরিনা তা জানায়নি।

২০০২ সালে ঘোড়াঘাট উপজেলার বুলাকীপুর ইউনিয়নের কলাবাড়ী গ্রামের আবু বক্করের মেয়ে শিরিনা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় একই উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে লোকমান আলীর। সংসারে ২ কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণের পর লোকমান জড়িয়ে পড়েন জঙ্গি তৎপরতায়। পরে তাদের আরো দুটি মেয়ে জন্ম নেয়।

পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে ফিরিয়ে আনার চাপ দেওয়া হলেও সেসময় ঢাকার একটি গার্মেন্টসে কাজ করার কথা বলে লোকমান স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চলে যান। প্রায় ৪ বছর ধরে লোকমান ও মেয়ে শিরিনাসহ নাতনিদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল না।

সর্বশেষ ২৯ মার্চ মোবাইল ফোনে শিরিনা আক্তার মা জোবায়দার সঙ্গে কথা বলেন। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে লোকমান ছিল সবার ছোট। তিনি ঘোড়াঘাট উপজেলার কৃষ্ণরামপুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন। লোকমানের মা জানান, তাকে ধরার জন্য ২০১১ সালে পুলিশ একবার বাসায় এলেও তাকে পায়নি।

ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসরাইল হোসেন বলেন, পুলিশ আগে থেকেই লোকমানের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি জানত। তাকে ধরার জন্য একাধিকবার অভিযান চালানো হলেও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। লোকমানের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানায় ২০০৮ সালের ২৫ অক্টোবর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়। সে মামলায় তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। আদালত তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ও ক্রোকি পরোয়ানা দিয়েছিলেন।

সিংড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, এ বছরের মার্চ মাসে ঘোড়াঘাট উপজেলায় কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভায় তিনি লোকমানসহ ৩ জঙ্গির নাম পুলিশের কাছে দিয়েছিলেন।

এদিকে নাসিরপুরে লোকমানসহ পরিবারের ছয় জনের আত্মঘাতী হামলায় নিহত সংবাদ পাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন লোকমানের বাবা নুরুল ইসলাম। লোকমানের বোন নুরজাহান, নুরবানু ও ভাই জাকারিয়া নিহতদের লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

এ জাতীয় আরও খবর

  • পাঁচ দিনেও বিস্ফোরকমুক্ত হয়নি আতিয়া মহল
  • বড়হাটের আস্তানায় মুহুর্মুহু গুলি-বিস্ফোরণ, পুলিশ আহত
  • ফের বরখাস্ত মেয়র আরিফ ও বুলবুল
  • নাসিরপুরে অভিযানে ৭ থেকে ৮ জঙ্গি নিহত (ভিডিও)নাসিরপুরে অভিযানে ৭ থেকে ৮ জঙ্গি নিহত (ভিডিও)
  • ‘বড়হাট আস্তানার পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল’
  • লক্ষ্মীপুরে গণধর্ষণের দায়ে চারজনের মৃত্যুদণ্ড