ইতিহাস গড়া হলো না টাইগারদের
---
স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের বোলিং আর ফিল্ডিং ব্যর্থতায় প্রথম ইনিংসেই চালকের আসনে বসেছিল ভারত। মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরির কল্যাণে ম্যাচটি পঞ্চম দিনে গড়ায়। ফলো-অন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ভারত। বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৪৫৯ রানের! সহজ হিসাব ছিল চতুর্থ দিনের শেষ সেশন আর পঞ্চম দিনের তিন সেশন ধরে ব্যাট করতে হবে বাংলাদেশকে। তবে ম্যাচটি অন্তত ড্র করা যাবে। পঞ্চম দিনে রানের ব্যবধান যেভাবে কমে আসছিল তাতে একটা বিশ্বরেকর্ডও উঁকি দিয়েছিল কারও কারও মনে। কিন্তু কোনোটাই হলো না। ঐতিহাসিক টেস্টে ইতিহাস গড়া হলো না টাইগারদের।
হায়দরাবাদ টেস্টে ২০৮ রানে হেরে গেল মুশফিক বাহিনী। ৩ উইকেটে ১০৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করা বাংলাদেশ পঞ্চম দিনের শুরুতেই সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিমকে হারায়। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে রবিন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণিতে। জাদেজার বলে চেতেশ্বর পুজারার হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাকিব (২২)। রবীন্দ্র জাদেজার আচমকা লাফিয়ে ওঠা বলে আসলে কিছু করার ছিল না সাকিব আল হাসানের।
সাকিবের বিদায়ের পর রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে অযথা তুলে মারতে গিয়ে রবিন্দ্র জাদেজার তালুবন্দি হন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। রিয়াদের সঙ্গে তার ৫৬ রানের জুটির সেখানেই ইতি ঘটে। প্রথম ইনিংসে ঠিক একই ভুল করে সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান।
দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বাংলাদেশ যখন অল আউটের শঙ্কায় ভুগছে তখন ফর্মহীনতায় ভোগা মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ হাল ধরলেন দলের। উমেশ যাদবকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১১৫ বলে তুলে নিলেন হাফ সেঞ্চুরি। কিছুটা আশার আলো জ্বলে উঠে বাংলাদেশ শিবিরে। কারণ সঙ্গী সাব্বির রহমানও দারুণ ব্যাট করছিলেন। দুজনের প্রতিরোধে ৫ উইকেটে ২০২ রান তুলে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। লাঞ্চ থেকে ফিরে এসেই আবারও মড়ক লাগে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে। পর পর ফিরে যান রিয়াদ এবং সাব্বির।
ইশান্ত শর্মার বলে পরিস্কার এলবিডাব্লিউ হয়ে যান সাব্বির রহমান। রিভিউ নিয়েও কাজ হয়নি। আউট হওয়ার আগে তিনি ৬১ বলে ৩ চার এবং ১ ছক্কায় ২২ রান করেন। এরপর ঠিক মুশফিকুর রহিমের পথে হাঁটেন তার ভায়রা ভাই মাহমুদ উল্লাহ। ইশান্ত শর্মার বল অযথা উড়িয়ে মারতে গিয়ে ভুবনেশ্বর কুমারের তালুবন্দী হন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বাধিক স্কোর করা মাহমুদ উল্লাহ। তিনি ১৪৯ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৬৪ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সৌম্য সরকারের ৪২।
এরপর কামরুল ইসলাম রাব্বীকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি ৬১ বলে ২৩ রান করে রবিন্দ্র জাদেজার বলে উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। তবে অসাধারণ টেস্ট মেজাজে ব্যাট করেন কামরুল ইসলাম। রবিন্দ্র জাদেজার ওপর চড়াও হতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তাইজুল। এরপর তাসকিন আহমেদ অশ্বিনের শিকার হলেও আউট করা যায়নি কামরুলকে! ৭০ বলে ৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
ভারতের হয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবিন্দ্র জাদেজা ৪টি করে উইকেট নেন। ইশান্ত শর্মা নেন ২ উইকেট। এ দিন অশ্বিনের চাইতে বেশি কৃপণ ছিলেন জাদেজা। তিনি ৩৭ ওভার বল করে ১৫টি মেডেনসহ মাত্র ৭৮ রান দিয়েছেন। অন্যদিকে ৩০ ওভার বল করে ১০ মেডেনসহ সমানসংখ্যক রান দেন অশ্বিন। ডাবল সেঞ্চুরি করে ম্যাচসেরা হন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি।