জেলা পরিষদ নির্বাচন : প্রচার-প্রচারনায় মুখরিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ২৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনের দিনক্ষন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বেড়েছে প্রার্থীদের ব্যস্ততা। চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের প্রার্থীরা দিনরাত প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলার প্রতিটি ইউনিয়নেরই শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোষ্টার ও ব্যানার। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা ভোটার ও সাধারণ জনগনের মাঝে তাদের লিফলেট বিতরণ করছেন। গোটা জেলা এখন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় তুঙ্গে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৪২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩জন, ১৫টি সাধারণ সদস্য পদের মধ্যে ১০টি পদে ৩৫জন এবং ৫টি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদের মধ্যে ২টি ওয়ার্ডে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইতিমধ্যেই ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে এবং ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের পথে রয়েছেন।
এছাড়াও ১টি সাধারণ সদস্য পদে একজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই ওয়ার্ডের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা প্রতিক বরাদ্দের পর ঘোষনা দিয়ে নির্বাচন থেকে সঁরে দাড়িয়েছেন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের পথে রয়েছেন সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে আসাদুজ্জামান চৌধুরী, ৮নং ওয়ার্ডে আবুল কাশেম ভূইয়া, ১০নং ওয়ার্ডে মোঃ আইয়ূব আলী ভূইয়া, ১৪ নং ওয়ার্ডে আবদুল হক এবং ১৫ নং ওয়ার্ডে আবদুল আওয়াল।
সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের ১নং ওয়ার্ডে শাহীন আক্তার খানম, ২ নং ওয়ার্ডে মোছাঃ স্বপ্না বেগম এবং ৫ নং ওয়ার্ডে সনি আক্তার।
এছাড়াও ৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে ( ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর, সুহিলপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, রামরাইল, সুলতানপুর, মাছিহাতা ও বাসুদেব ইউনিয়ন) একমাত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাদেকুর রহমান শরীফ-(তালা)। প্রতিক বরাদ্দের পর এই ওয়ার্ডের নির্বাচন থেকে সঁড়ে দাড়িয়েছেন মোঃ মনির খান-(উটপাখী) ও মোঃ শাহিন ভূইয়া (টিফিন ক্যারিয়ার) প্রতিক।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩জন প্রার্থী। এর মধ্যে একজন আওয়ামীলীগ সমর্থিত। অপর দুইজন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী। অবশ্য জেলা আওয়ামীলীগের দাবি চেয়ারম্যান পদে দলের একক প্রার্থী রয়েছেন। বাকী দু’জন আওয়ামীলীগের কেউ নয়। আওয়ামীলীগের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।
চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এ.কে.এম এমদাদুল বারী- (চশমা) প্রতিক, বিদ্রোহী প্রার্থী ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ শফিকুল আলম-(আনারস) প্রতিক, এবং মোবারক হোসেন-(ঘোড়া) প্রতিক।
২ নং সাধারন ওয়ার্ডে (নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক, গুনিয়াউক, পূর্বভাগ, হরিপুর, চাপরতলা, ধরমণ্ডল ইউনিয়ন এবং সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩জন প্রার্থী। এরা হলেন সৈয়দ সাজ্জাদ মোর্শেদ (ঘুড়ি), গোলাম সামদানী (হাতি) ও ফারুকুজ্জামান ফারুক (তালা)।
৩ নম্বর ওয়ার্ডে (সরাইল উপজেলার অরুয়াইল, পাকশিমুল, চুন্টা, কালিকচ্ছ, নোয়াগাঁও, সরাইল ও শাহবাজপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ সোলাইমান মিয়া (তালা), মোঃ মনিরুল ইসলাম (টিউবওয়েল) ও মোঃ পায়েল হোসেন মৃধা (অটোরিকসা)। এই ওয়ার্ডের অপর প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম (হাতি) নির্বাচন থেকে ঘোষনা দিয়ে সঁড়ে দাড়িয়েছেন।
৪ নম্বর ওয়ার্ডে (সরাইল উপজেলার পানিশ্বর উত্তর ইউনিয়ন এবং আশুগঞ্জ উপজেলার আশুগঞ্জ, চরচারতলা, দুর্গাপুর, আড়াইসিধা, তালশহর পশ্চিম ও লালপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ কবির আহমেদ (হাতি) ও এস.এম সেলিম জাহাঙ্গীর (তালা)।
৫ নম্বর ওয়ার্ডে (আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ও তারুয়া ইউনিয়ন এবং সদর উপজেলার বুধল, তালশহর (পূর্ব), সাদেকপুর, নাটাই (উত্তর)ও নাটাই (দক্ষিণ) ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ হালিম শাহ লিল মিয়া ( হাতি), মোঃ বাবুল মিয়া (ঘুড়ি), মোঃ আবদুল বাছির (উট পাখী), মোহাম্মদ হোসেন (তালা) ও মোঃ অহিদ মিয়া (টিউবওয়েল)। এই ওয়ার্ডের অপর প্রার্থী মোঃ মোমিন খান ( অটোরিকসা) প্রতিক বরাদ্দের পর ঘোষনা দিয়ে নির্বাচন থেকে সঁড়ে দাড়িয়েছেন।
৭ নম্বর ওয়ার্ডে (বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি, চান্দুরা, ইছাপুরা উত্তর, চম্পকনগর, হরষপুর, পত্তন ও চরইসলামপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ জহিরুল ইসলাম ভূইয়া (তালা) ও আলমগীর কবির (টিউবওয়েল)।
৯ নম্বর ওয়ার্ডে (আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ও ধরখার ইউনিয়ন এবং কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর, কসবা (পশ্চিম), কসবা পৌরসভা, কায়েমপুর ও বায়েক ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩জন প্রার্থী। এরা হলেন মোহাম্মদ মনিরুল হক (ঘুড়ি), মোঃ মোশাররফ হোসেন (অটোরিকসা) ও মোঃ ইয়াছিন মিয়া (তালা)।
১১ নম্বর ওয়ার্ডে (নবীনগর উপজেলার বড়াইল, বীরগাঁও, কৃষ্ণনগর, নাটঘর, বিদ্যাকুট, নবীনগর পূর্ব ও কাইতলা উত্তর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩জন প্রার্থী। এরা হলেন মোঃ আবুল হোসেন আজাদ (টিউবওয়েল), মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন (ঘুড়ি) ও মোঃ নাসির উদ্দিন (তালা)।
১২ নম্বর ওয়ার্ডে (নবীনগর উপজেলার নবীনগর (পশ্চিম), বিটঘর, শিবপুর, শ্রীরামপুর, লাউরফতেহপুর, ইব্রাহিমপুর ও নবীনগর পৌরসভা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫জন প্রার্থী। এরা হলেন, কবির হোসেন (হাতি), মোহাম্মদ সেলিম (বক), মোঃ জাকির হোসেন সাদেক (টিউবওয়েল), বোরহান উদ্দিন আহমেদ (তালা) ও শফিকুল ইসলাম (ঘুড়ি)।
১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (নবীনগর উপজেলার জিনোদপুর, রসুল্লাবাদ, সাতমোড়া, শ্যামগ্রাম, বড়িকান্দি, ছলিমগঞ্জ ও রতনপুর ইউনিয়ন) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪জন প্রার্থী। এরা হলেন, মোঃ মিজানুর রহমান (টিউবওয়েল), মোঃ মাহবুব রেজা (ঘুড়ি), এ. কে.এম মোজাম্মেল হক ( বৈদ্যুতিক পাখা) ও জসিম উদ্দিন (তালা)।
সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২জন প্রার্থী। এরা হলেন সৈয়দা নাখলু আক্তার (দোয়াত-কলম) ও আলেয়া বেগম চৌধুরী (টেবিল ঘড়ি)।
সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২জন প্রার্থী। এরা হলেন নূরুন্নাহার বেগম (দোয়াত-কলম) ও রাজিয়া বেগম (ফুটবল)।
এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আল-মামুন বলেন, জেলা পরিষদের ১৫টি সাধারণ সদস্য পদের মধ্যে ৫জন প্রার্থী এবং ৫টি সংরক্ষিত সদস্য পদের মধ্যে ৩জন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের পথে রয়েছেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্গনের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলায় ১৩৯৬ জন জনপ্রতিনিধি ভোটার থাকার কথা থাকলেও বিভিন্ন ইউনিয়নে সীমানা নিয়ে বিরোধের কারনে মামলা মোকদ্দমা থাকায় এবং জনপ্রতিনিধিদের মৃত্যুজনিত কারনে মোট ১৩৬৭জন জনপ্রতিনিধি আগামী জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার হয়েছেন।