রবিবার, ৭ই মে, ২০১৭ ইং ২৪শে বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কাজী আরিফকে গার্ড অব অনার

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ২, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাজী আরিফকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হলো। আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টায় ম্যাজিস্ট্রেট রবীন্দ্র চাকমার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কাজী আরিফকে গার্ড অব অনার জানান।

এরপর তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ, গোলাম কুদ্দুস, কাওসার চৌধুরী, রোকেয়া প্রাচী, এস এম মহসীন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, বিভিন্ন সংগঠন, তার বন্ধু, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী আর সংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষজনসহ আরও অনেকে।

মুক্তিযোদ্ধা, আবৃত্তিশিল্পী ও স্থপতি কাজী আরিফের মরদেহ আজ সকালে ঢাকা এসে পৌঁছেছে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ জানান, কাজী আরিফের মরদেহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ফ্লাইটটি সকাল পৌনে ৯টায় রাজধানীর হয়রত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। এখানে কাজী আরিফের মরদেহ গ্রহণ করেন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু শমরিতা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ বি এম হারুনসহ আরও কয়েকজন। ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দও।

আগেই জানানো হয়েছে কাজী আরিফের মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। সেখান থেকে কাজী আরিফের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ধানমণ্ডিতে তার মেয়ে অনুসূয়ার বাসায়। বিকালে উত্তরায় ৪ নম্বর সেক্টরে মায়ের কবরের পাশে কাজী আরিফকে সমাহিত করা হবে।

গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে মাউন্ট সেইন্ট লুকস হাসপাতালে কাজী আরিফকে চিকিৎ​সক মৃত ঘোষণা করেন। গত মঙ্গলবার এই হাসপাতালে দ্বিতীয়বারের মতো তার হৃৎপিণ্ডে অস্ত্রোপচার করা হয়। কাজী আরিফের হার্টের ভাল্ব অকেজো হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার ভাল্ব পুনঃস্থাপন এবং ধমনীতে বাইপাস অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কাজী আরিফ।

কাজী আরিফের জন্ম ১৯৫২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, রাজবাড়ী সদরের কাজীকান্দা গ্রামে। বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রাম শহরে। পড়াশোনা, রাজনীতি, শিল্প-সাহিত্য এসব কিছুরই হাতেখড়ি হয় সেখানে। আবৃত্তির পাশাপাশি লেখালেখিও করতেন তিনি, সক্রিয় ছিলেন সাংস্কৃতিক আন্দোলনে।

১৯৭১ সালে ১ নম্বর সেক্টরে মেজর রফিকুল ইসলামের কমান্ডে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন কাজী আরিফ। এরপর যুদ্ধ শেষে বুয়েটে লেখাপড়া শুরু করেন আর সাথে সমান তালে এগিয়ে যেতে থাকে তার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি। বাংলাদেশের আবৃত্তিশিল্পের অন্যতম রূপকার কাজী আরিফ। তিনি মুক্তকণ্ঠ আবৃত্তি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য্য।