বুধবার, ২৮শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ইং

বাঞ্ছারামপুরে  স্কুল এন্ড কলেজের মাদক  ও অসামাজিক কর্মকান্ডের মিলন মেলা নেই বৈধ কোন কাগজপএ

AmaderBrahmanbaria.COM
ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬

নিজস্ব প্রতিনিধি : ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া  বাঞ্ছারামপুরে উপজেলায়  অনুমোদনবিহীন ইউনিক মডেল স্কুল এন্ড কলেজের মাদক ও  অনৈতিক কর্মকান্ড মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে বখাটেদের।  এছাড়া  সেখানে বড় ধরণের  শিক্ষা বাণিজ্যের অভিযোগও পাওয়া গেছে। গত ২১ ডিসেম্বর এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অনুমোদনবিহীন স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৌহিদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা তেজখালী ইউনিয়নের হাসন্নগর গ্রামে গত কয়েক বছর ধরে অনুমোদনবিহীন ইউনিক মডেল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত করে চলছে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ড ও শিক্ষা বাণিজ্য। নামধারী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে প্রথম থেকেই এলাকাবাসীর নানান সমালোচনার সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন রাতে বহিরাগত বখাটেদের আনাগোনা, মাদকসেবন, শিক্ষার্থীদের দিয়ে পাঠদানসহ বিতর্কিত বিভিন্ন কর্মকান্ডের কারনে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. খবির উদ্দিন লোভনীয় লিফলেট ও পোস্টার ছাপিয়ে বাংলাদেশের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদের দিয়ে পাঠদান করানোর চটকদার মিথ্যা প্রচারনা চালিয়ে আসছেন। গত কয়েক বছর অবৈধ ভাবে পাঠদান করে আসলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। আশপাশের এলাকার অন্য স্কুলের নামে বই উঠিয়ে ও রেজিস্ট্রেশন করে পরীক্ষা দেওয়াচ্ছেন পরীক্ষার্থীদের। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে প্রতারনা করা হচ্ছে।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, এই স্কুলে খবির উদ্দিনের তত্বাবধানে প্রতিদিন রাতে এখানে মাদকের আসর বসার পাশাপাশি রাত যাপন করা হয়। এই স্কুলটির মাত্র ১০০ গজ পূর্ব পার্শ্বে জীবনগঞ্জ বাজারে ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ঐতিহ্যবাহী “দরিকান্দি বাড্ডা আসমাতুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়”। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এত কাছাকাছি কোন স্কুল করার বিধান নেই।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ছাত্রের বাবা অভিযোগ করে বলেন,“খবিরের স্কুলে পড়ালেখার নামে মেয়েদেরকে প্রেম শিখানো হয়। তার এখানে সব অবিবাহিত পোলাপাইন মাস্টার। ওরা বিভিন্ন ছাত্রী ও ছাত্রীর বড় বোনদেরকে প্রেমের অফারও দেয়। রাতের বেলা স্কুলে বসে এই সব মাস্টাররা মদ ও বিয়ার খায়। রাতের বেলা ছাত্রীদের বাড়িতে গিয়া বিভিন্ন ফাইজলামি করে। এইসব কারনে আমার মেয়েরে এই স্কুল থেকে নিয়া আইছি।”
এবিষয়ে তেজখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, “হাসন্নগরে ইউনিক মডেল স্কুল এন্ড কলেজ একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠান। আমার ইউনিয়নে কোন অবৈধ প্রতিষ্ঠান থাকতে দিব না। প্রিন্সিপাল হইতে গেলে যেসব যোগ্যতা থাকা দরকার তাও নেই খবিরের।”
এবিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন, “হাসন্নগর গ্রামে অবৈধ ইউনিক মডেল স্কুল এন্ড কলেজের নামে বিভিন্ন অনিয়ম ও নারী ঘটিত ঘঁনার বিষয়ে গত ২১ ডিসেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। সেই প্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবু তৌহিদ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “ইউএনও স্যার আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে অচিরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইচ্ছা করলেই কেউ মনগড়া প্রতিষ্ঠান দিয়ে প্রিন্সিপাল লিখতে পারেনা।”
এবিষয়ে ইউনিক মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মো. খবির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন,“আমার প্রতিষ্ঠানে মাদকসেবন ও নারীঘটিত কোন কেলেঙ্কারীর ঘটনার অভিযোগ মিথ্যা। আমার  স্কুল এন্ড কলেজের কোন অনুমোদন নেই তা অবশ্য ঠিক, তবে অনুমোদন নেওয়ার চেষ্টা করছি।”