মঙ্গলবার, ৯ই মে, ২০১৭ ইং ২৬শে বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বিজয়নগরে কৃষকের কান্না : পানি শূন্যতায় ৭৫০০ একর জমি

AmaderBrahmanbaria.COM
ডিসেম্বর ১০, ২০১৬

আমিরজাদা চৌধুরী, বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে॥ বিজয়নগরে চলতি বোরো মৌসুমে অন্তত ৪৫ হাজার মন ধান উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এ নিয়ে কৃষকরা চিন্তিত। স্থানীয় গরীব কৃষকরা মানুস্য সৃষ্ট সংকট থেকে পরিত্রান পেতে এখানে সেখানে ঘুরছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। জেলার বিজয়নগর উপজেলার অন্তত ৭৫০০ একর জমি পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের সেমড়া কাঁদর খালে মাছ ধরার জন্য বাঁধ দেয়া হয়। এতে করে এ এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলী জমি পানির অভাবে চাষাবাদ ব্যহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, প্রতি এক কানি জমিতে ১৮ থেকে ২০ মন ধান উৎপাদন হয়। সে হিসেবে এক একর জমিতে অন্তত ৬০ মন ধান উৎপাদন হওয়ার কথা। কিন্তু খালটি লিজ দেয়ায় বিপুল পরিমান ফসলী জমিতে পানি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে অন্তত ৪৫ হাজার মন ধান কম উৎপাদন হবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা আশংকা করছেন। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকতার উন নেছা শিউলীর নিকট ভূক্তভোগী কৃষকরা আবেদন করেছেন। এতে বলা হয়, বুধন্তি ইউনিয়নের সেমড়া, তালতলা, ফতেহপুরসহ আশপাশ গ্রামের বাসিন্দারা কৃষি ফসলের উপর নির্ভরশীল। গ্রাম সমূহের বুক চিড়ে বয়ে গেছে কাঁদর খাল।

 

এ খালের উল্লেখিত পানিতে গ্রামের ৭৫০ একর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। কিন্তু খালটি স্থানীয় কৃষকদের ইজারা না দেয়ায় বহিরাগত ইজারাদাররা ইচ্ছামত খালের মাছ ধরার জন্য খালের সুইচ গেইট ইচ্ছামত খোলা এবং বন্ধ রাখে। খালের পানি সেচে ইতোমধ্যে পানি শূন্য করে ফেলা হয়েছে। এতে পাশ্ববর্তী জমিগুলো পানির অভাবে খাঁ খাঁ করছে। কোন কোন জমি ফেটে চৌচির। বলতে গেলে, এ এলাকায় বোরো ফসল চাষ বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে লিজ গ্রহনকারী ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় নিরীহ কৃষকরা ভয়ে কথা বলতে চান না। এমতবস্থায় জমি চাষের জন্য কাঁদর খালের পানির প্রয়োজন। দ্রুত এ খালের পানি সরবরাহ নিশ্চিতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় পুরো ঘটনাটি তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশকড় আলীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা মশকর আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি জমি পরিদর্শন করেছি। আরো তদন্ত হবে। বীজ তলায় সেচের প্রয়োজন আছে। এলাকার মানুষের ও বীজতলার প্রয়োজন আছে। পানি সেচের ব্যবস্থার মাধ্যমে বোরো ধান চাষ সম্ভব হবে। তিনি কৃষি জমির স্বার্থে খাল লিজ না দেয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন।