মঙ্গলবার, ৯ই মে, ২০১৭ ইং ২৬শে বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

আজ নাসিরনগর হানাদারমুক্ত দিবস

AmaderBrahmanbaria.COM
ডিসেম্বর ৭, ২০১৬

আকতার হোসেন ভুইয়া, নাসিরনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)সংবাদদাতা ॥ আজ ৭ ডিসেম্বর নাসিরনগর হানাদার মুক্ত দিবস। দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১-এর এই দিনে মুক্তিপাগল জনতা ও দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধারা নাসিরনগর থেকে পাক-হানাদারদের বিতাড়িত করেন। হানাদার মুক্ত করে এই দিনে নাসিরনগরের আকাশে উড়েছিল লাল সবুজের পতাকা। নাসিরনগরের ইতিহাসে এ দিনটি বিশেষ স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর পাকহানাদার বাহিনী ও এ দেশীয় দোসর রাজাকার,আল-বদরের সহায়তায় উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে অগ্নিসংযোগ,লুটপাটসহ নারকীয় তান্ডব চালায়। পাকবাহিনীর অমানবিক নির্যাতনে বহু লোক আহত ও নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রামী জনতা পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই করে অবশেষে ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা “জয়বাংলা-জয়বাংলা”শ্লোগানে মুখরিত করতে করতে এলাকায় ঢুকতে থাকে,ক্রমেই শ্লোগানের আওয়াজ স্পষ্ট হয়,কেটে যায় শংকা। মুক্তিযোদ্ধাদের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে মুক্তির উল্লাসে মেতে উঠে স্বরস্তরের মানুষ।মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীরা এগিয়ে যায় সামনের দিকে,পিছু হটে হানাদার বাহিনী । নাসিরনগর থানা অভ্যন্তরে (পুলিশ ষ্টেশন) স্বাধীন বাংলার আকাশে লাল সবুজের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই দিনে নাসিরনগরকে পাক-হানাদার মুক্ত করেন। তাই এদিনটি এলাকার মুক্তিপাগল মানুষের বিজয়ের দিন।

তবে স্বাধীনতার ৪৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর অবশেষে মুক্তিযুদ্ধে যে সকল বীরসেনা আত্মহুতি দিয়েছিলেন তাদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য নাসিরনগরে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক নির্মিত হলেও তা উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। ২০০৮ সালের ২৬ মার্চ উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ফলকের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করার দীর্ঘদিন পর মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রী আলহাজ্ব এডভোকেট মোহাম্মদ ছায়েদুল হক এমপির সার্বিক সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতায় প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতিসৌধটি মাটি থেকে ৪০ ফিট উচ্চতায় স্মৃতিসৌধের নিমার্ণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে । এখন শুধু শহীদ পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ফলক লেখা আর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সোহরাব মোল্লা জানান,শহীদ পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা নিয়ে আমাদের মধ্যে দ্বিমত সৃষ্ঠি হওয়ায় নাম ফলক লেখা অসর্ম্পূন রয়েছে। এদিকে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজাকারদের বিচার শুরু করে এবং শীর্ষ স্থানীয় রাজাকারদের বিচার করে ফাঁসির রায় কার্যকর করায় বাংলাদেশ কলঙ্ক মুক্ত হচ্ছে। প্রশংসিত হচ্ছে মানুষের কাছে। এজন্য তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

এ জাতীয় আরও খবর