মঙ্গলবার, ৯ই মে, ২০১৭ ইং ২৬শে বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

যে কারণে কুরিয়ারে অবৈধ পণ্য আনার প্রবণতা

AmaderBrahmanbaria.COM
নভেম্বর ২০, ২০১৬

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারের নিয়ন্ত্রণহীনতা, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ঢিলেঢালা নজরদারি, পণ্য আনানেয়ায় এলসি খোলার নিয়ম না থাকার কারণে অবৈধ পণ্য আনার একটি সহজ পথ বিবেচিত হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস। তাই এই সার্ভিসের মাধ্যমে বৈধ পণ্যের পাশাপাশি অবৈধ পণ্য আনার হিড়িক বাড়ছে। তবে এটাই অবৈধ পণ্য আনার একমাত্র মাধ্যম নয়।

সূত্র মতে, মাঝে মাঝে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আনা অবৈধ পণ্যের চালান আটক হলেও শীর্ষভাগই নজরদারির বাইরে থেকে যায়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ-সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে গোয়েন্দা সূত্র বলছে, নমুনা পাঠানোর নামে কুরিয়ার সার্ভিসে অবৈধ পণ্য আনার প্রবণতা বাড়ছে। এ পথে কী ধরনের পণ্য আসছে বা যাচ্ছে তা পরীক্ষা করা হয় না এবং নেই নজরদারিও। তবে কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এই পথে অবৈধ পণ্য আনার সুযোগ কম। কেননা, কুরিয়ারে পণ্য আসে কম। বেশি আনা হয় পোশাক পণ্যের নমুনা। কিছু আসে শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল, উপহার সামগ্রী ইত্যাদি। এখানে মিথ্যা ঘোষণা দেয়ার সুযোগ কম। তারা দাবি করেন, আকাশপথে কার্গো পরিবহন তথা ফ্রেইটে এলসি করে বাণিজ্যিক ঘোষণায় আনা পণ্যের ক্ষেত্রে দুর্নীতি করার সুযোগ বেশি। এতে ব্যাপক কারসাজি করা ও মিথ্যা ঘোষণা দেয়া সহজ। কুরিয়ার সার্ভিস ইউনিটের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৫৫টি প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

তবে কার্গো পরিবহন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তাদের কাজ হচ্ছে পণ্য পরিবহন করা। কার্টন বা প্যাকেটে কী পণ্য আসছে বা যাচ্ছে, তা পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ তাদের নেই। এটা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। কার্গো পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, কার্গোতে অবৈধ পণ্য আনার সুযোগ কম। কারণ কার্গোতে পণ্য আনতে হলে এলসি লাগে। কাস্টমস তা পরীক্ষা করে দেখে। কুরিয়ারে আনা পণ্যের জন্য এলসি লাগে না। তাই সেখানেই বেশি অনিয়ম হয় বলে দাবি করেন তিনি।

সূত্র জানায়, কুরিয়ারে পণ্যের নমুনা ও সঙ্গে নথি (ডকুমেন্ট) পাঠানোর নিয়ম থাকলেও সব ধরনের পণ্যই আসছে। কুরিয়ারে সরাসরি পণ্য আনা-নেয়া করা যায়। কোনো এলসি লাগে না। তাই নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এর মাধ্যমে অবৈধ পণ্য ঢুকছে।

ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার লুৎফর রহমান বলেন, ঢালাওভাবে অভিযোগ করা ঠিক নয়। কিছু অবৈধ পণ্য আসছে। তা আটক হচ্ছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। কার্গোতে পণ্য পরিবহনের খরচ বেশি। সে জন্য এ পথে পণ্য আনার ক্ষেত্রে মিথ্যা ঘোষণা দেয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। ঢাকা কাস্টম হাউস মূলত পণ্যের নমুনা ও নথিপত্র পরীক্ষা করার কেন্দ্র।

ঢাকা কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন বলেন, কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবসার ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও সক্রিয় নয়।