নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ দিনের সফর শেষে শুক্রবার দেশে ফিরছেন। এ সফরকালে তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশন এবং মন্ট্রিলে গ্লোবাল ফান্ড মিটিংয়ে যোগ দেন।তিনি বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) এমিরেটসের ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার ডুলেস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ত্যাগ করবেন। দুবাই হয়ে শুক্রবার বিকেলে তাঁর ঢাকা পৌঁছার কথা রয়েছে।
উত্তর আমেরিকার দেশ দুটি সফরে তিনি গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা ত্যাগ করেন। সফরের প্রথম পর্যায়ে তিনি ১৫ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডা সফর করেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আমন্ত্রণে তিনি গ্লোবাল ফান্ড মিটিংয়ে যোগ দিতে যান।
দ্বিতীয় পর্যায়ে শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যান। নিউইয়র্ক অবস্থানকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন।
কানাডা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। এ সময় তাঁরা বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আলোচনার মাধ্যমে একটি উপায় বের করতে একমত হন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রুডোর কাছে ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার সম্মাননা হস্তান্তর করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ট্রুডোর পিতা পিয়েরে ট্রুডোর অসামান্য অবদান ও সমর্থনের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শরণার্থী ও অভিবাসন সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনুসরণ করে তিনি অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শরণার্থী ও অভিবাসীদের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের বন্ধুত্ব আরো জোরদারে পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার জন্য তাদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের জন্য পুনরায় আহবান জানান।
শেখ হাসিনা মায়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় ইস্যুসমূহ সমাধানে তাঁরা একমত হন।
এ ছাড়া শেখ হাসিনা সুইডেনের প্রেসিডেন্ট জোহান সেনিডার আম্মান, কমনওয়েলথ মহাসচিব পেট্রিসিয়া জেনেট স্কটল্যান্ড, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াব এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম-সহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন।
প্রবাসী বাংলাদেশীরা মন্ট্রিল ও নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করে। ভার্জিনিয়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অবস্থানের জন্য নিউইয়র্ক ত্যাগের আগে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর এ সফরের সাফল্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করেন।