পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ডনের খবরে দাবি করা হয়েছে, কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতের গুলি বর্ষণের প্রতিবাদে পাক সেনাবাহিনীর পাল্টা হামলায় ভারতের ১৪ সৈন্য নিহত হয়েছে। অপর এক ভারতীয় সৈন্যকে আটক করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানি সাংবাদিক হামিদ মীর এ তথ্য জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার নিয়ন্ত্রণ রেখার টাত্তা পানিতে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘঠেছে। একটি নিরাপত্তা সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে ডন।
খবরে বলা হয়, বিনা উস্কানিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমান্ত জুড়ে উন্মুক্ত গুলি বর্ষণ করেছে। এসময় ওই আটক ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পাকিস্তানের দুই সৈন্যও নিহত হয়েছে।
জিও নিউজের ‘ক্যাপিটটাল শোতে’ হামিদ মীর বলেছেন, দুই সেক্টরে ১৪ ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। শোতে অংশ নেয়া পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব:) ইজাজ আওয়াজ তার এ দাবি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আটক ভারতীয় সেনার বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। তার নাম চান্দু বাবুলাল চোহান। তাকে একটি গোপন জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তার বাবার নাম বাশান চোহান। বয়স ২২ বছর। ধর্ম হিন্দু। তার বাড়ি ভারতের মহারাষ্ট্রে।
নিয়ন্ত্রণ রেখার যে এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে সেখানে এখনও ভারতীয় সৈন্যদের লাশ পড়ে আছে। ভারতের সেনাবাহিনী তাদের লাশ উদ্ধারে এখন পর্যন্ত কোন চেষ্টা চালায়নি।
সূত্র দাবি করেছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে গুলি ছোঁড়ায় ঘটনাস্থলে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত তাদের লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করেনি।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উভয় কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার ভিমবার, হটস্প্রিং, কেল ও লিপা সেক্টরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে। বুধবার রাত আড়াইটা থেকে শুরু হয়ে সকাল আটটা পর্যন্ত গোলাগুলি চলেছে। পাক সেনাবাহিনী দাবি করেছে ভারতীয় বাহিনীর বিনা উস্কানির গুলিবর্ষণের জবাবে তারা এর সমুচিত জবাব দিয়েছেন।
এদিকে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে তারা সন্ত্রাসীদের আটটি আস্তানায় ‘সার্জিকেল স্ট্রাইক’ চালিয়েছে। এতে সন্ত্রাসীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়। সার্জিকেল স্ট্রাইক বলতে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কোন সন্ত্রাসী আস্তানায় অভিযান চালানো বোঝানো হয়।
বৃহস্পতিবার ভারতের সেনাবাহিনীর ডিজিএমও লে. জেনারেল রণবীর সিংহ এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন। তবে তিনি জানান, এ ঘটনায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে ভারতের সার্জিকেল স্ট্রাইকের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। দেশটির সেনাবাহিনী বলছে, ভারত বিনা উস্কানিতে গুলি বর্ষণ করেছে। তারাও এর উচিত জবাব দিয়েছে। এ ঘটনায় দুই সৈন্য নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারা।
ডিএনএ ইন্ডিয়াসহ ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যমে একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনা বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে যে অভিযান চালিয়েছে, তাতে ৩৮ সন্ত্রাসী ও দুই পাক সৈন্য নিহত হয়েছে।