ছোট হয়ে যাচ্ছে তিতাস
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রমত্তা তিতাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষের প্রাণের স্পন্দন। তিতাসপাড়ের জেলেদের সুখ-দুঃখ নিয়ে ঔপন্যাসিক অদ্বৈত মল্লবর্মণ লিখেছিলেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাস। তিতাসের সেই বিশালতা এখন আর নেই। নেই কূল জোড়া জল আর সেই দুরন্ত ঢেউ। নাব্যতা হারিয়ে মেঘনা কন্যাখ্যাত তিতাস ক্রমশ জরাজীর্ণ ও দুর্বল খালে পরিণত হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃষক ও জেলেদের জীবন-জীবিকার প্রধান উৎস তিতাস নদী পানি দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। এক সময় যে নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল বাণিজ্যিক হাট-বাজার সেই নদীর করুণ দশায় তিতাস পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকা এখন অনিশ্চিয়তার মুখে। দীর্ঘ দিন ধরে তিতাস নদী খনন না করার কারণে লাখ লাখ মানুষের জীবন জীবিকা ব্যাহত হচ্ছে। তারা বাপ-দাদার পুরানো জেলে পেশা ছেড়ে অন্য কাজের দিকে ঝুঁকছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নদীর দুপাড়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ধান-চালের বয়লার ও ইট ভাটা। আর ইট ভাটার মালিকেরা তাদের খুশি মত যত টুকু পারছে দখল করে নিচ্ছে। এ যেন দখলের মহাৎসব। ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিতাস নদীর দুপাড়ে এভাবেই দখলের ফলে নদীর হারাচ্ছে তার মূল অস্তিত্ব। ছোট হয়ে আসছে নদীর সীমানা।
সরকারে পক্ষ থেকে দ্রুত এই তিতাস নদী খনন করা না হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাথে নরসিংদী- ভৈরব-আশুগঞ্জ-নবীনগরসহ সারা দেশের লঞ্চ চলাচল এক সময় বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশংকার কথা জানান নদী বিশ্লেষক ও লঞ্চ চালকরা। আর তাতে আর্থিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে নদী নির্ভয়শীল সাধারণ খেটে -খাওয়া সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
পানি উন্নয়ণ বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী মঞ্জুর হোসেন চৌধুরী বলেন, অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে তিতাস নদী খননের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিতাসের ১৩০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৯১ কিলোমিটার নদী খননের জন্য ১৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিজস্ব তত্বাবধানে এ কাজ তদারকি করা হবে। এ বছর খনন কাজ শুরু হলে আশাকরি ২০২০ সালের জুন মাস নাগাদ শেষ হবে।অবৈধ দখলের ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।