বুধবার, ১৩ই ডিসেম্বর, ২০১৭ ইং ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

এসএমএস-এ তৌফিক-সোনিয়া

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ২, ২০১৬

---

SMS PIC_3আমিরজাদা চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : স্বামীর ঘর ছেড়ে ফারজানা হোসেন সোনিয়া বলেছিলেন সৈয়দ তৌফিক আহমেদের সঙ্গে তার অন্য কোন সম্পর্ক নেই। তারা ব্যাংকিং বিষয়ে শুধু কথাবার্তা বলেছেন। কিন্তু আদালতে পুলিশের দাখিল করা তাদের মোবাইল ফোনে দেয়া এসএমএস(ক্ষুদে বার্তা) সিডিআর ও কলরেকর্ড বলছে অন্য কথা। তাদের দু-জনের মধ্যে অসংখ্য ম্যাসেজ আদান প্রদান হয়েছে এক-দেড় মাসে। যা এক গভীর সম্পর্কেরই জানান দিচ্ছে। পরকীয়া প্রেমি এ দু-জনের একজন সৈয়দ তৌফিক আহমেদ বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। আর সোনিয়া রয়েছেন জামিনে। গত ৪ ঠা মে গুলশান থানার সাব ইন্সপেক্টর মো: সাব্বির রহমান গুলশান থানার মামলা নং ১৯,তারিখ ৩০/০৩/১৬ইং সুত্রে মোব্ইাল ফোনের এসএমএস সিডিআর ও কলরেকর্ড ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে জমা দেন। তৌফিক জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক। আর সোনিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতনের স্ত্রী । তৌফিকেরও রয়েছে স্ত্রী-সন্তান। সোনিয়া গত ২৯ শে মার্চ সকালে ঢাকার গুলশানের বাসা ছেড়ে যান। এরপরই কথা উঠে সৈয়দ তৌফিক আহমেদের হাত ধরে উধাও হয়েছেন এই গৃহবধু।
এ ব্যাপারে সোনিয়ার স্বামী আবদুল হান্নান রতন ৩০ শে মার্চ গুলশান থানায় একটি মামলা দেন। মামলা নম্বর-১৯। এতে তৌফিক ছাড়াও তৌফিকের গাড়ির ড্রাইভার তোতা মিয়া ও সোনিয়াকে আসামী করা হয়। মামলায় চুরি,ব্যাভিচারের অভিযোগ আনা হয় তৌফক ও সোনিয়ার বিরুদ্ধে। এ মামলায় আসামীরা জামিন নেয়। পরবর্তীতে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্যে আবদুল হান্নান রতনকে মারধোর ও হুমকী-ধামকী দেয়া হয়। এ বিষয়ে রতন একটি জিডি করেন। ১২ ই মে আদালতে জিডির অভিযোগের বিষয়ে শুনানী হয়। ঐদিনই আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তৌফিকের জামিন হয়নি এখনো। তবে সোনিয়া ঐদিনই বিশেষ আদালত থেকে জামিন নেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের এক নেতার স্ত্রীকে আরেক নেতার পরকীয়া প্রেমের জালে ঘর ছাড়া করার ঘটনা ব্যাপক আলোচিত ।
SMS PIC_1১৯৯৮ সালের ৬ ই সেপ্টেম্বর বিয়ে হয় রতন ও সোনিয়ার। তাদের ৩ সন্তান রয়েছে। ঘটনার পরই রতন তার স্ত্রীকে বাগিয়ে নেয়ার জন্যে তৌফিককে দায়ী করেন। তবে সোনিয়া ও তৌফিক দু-জনেই বলছিলেন তারা একে অপরের সঙ্গে ব্যাংকিং বিষয়ে কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু ফোনের কল রেকর্ডে স্পষ্ট হয় সোনিয়া বাসা থেকে বের হয়ে তৌফিকের সঙ্গেই ছিলেন। উল্লেখ্য তৌফিক একটি প্রাইভেট ব্যাংকের কর্মকর্তা। তবে সোনিয়ার ঘর ছাড়ার বিষয়ে থানায় মামলা হলে পুলিশ কলরেকর্ড ও তাদের দু-জনের মধ্যে চালাচালি হওয়া এসএমএস(ক্ষুদে বার্তা)সংগ্রহ করে। এতে ধরা পড়ে তারা মজেছিলেন গভীর পরকীয়া প্রেমে। রতনের পরিবার সুত্রে জানা যায়-এ বছর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস(১৪ ফেব্রুয়ারী ) থেকে তারা সম্পর্কে জড়ান। তা গভীর হয় সোনিয়ার স্বামী রতন ২৩ শে ফেব্রুয়ারী কানাডা চলে যাওয়ার পর। ১৩ ই মার্চ সকালে রতন দেশে ফিরে আসেন। রতন বিদেশ থাকাকালীন সময়ে তারা অবাধ মেলামেশা করে। নিয়মিত যোগাযোগ করে একে অপরের সঙ্গে। এই অভিযোগের সত্যতা মিলে সোনিয়া ও রতনের মধ্যেকার এসএমএস গুলোতে। মার্চ মাসের প্রতিদিন তাদের মধ্যে এসব এসএমএস আদান প্রদান হয়। ১৪ ই মার্চ সোনিয়া তার ০১৭৩২২৪১৬৫২ নম্বর থেকে তৌফিককে পাঠানো একটি এসএমএস-এ লিখেন- ‘আই লাভ ইউ জান’। আরেকটি এসএমএস-এ লিখেন- ‘ভালোবাসি খুব বেশী। অনেক ভালোবাসা নিয়ে তুমি থেকো পাশে..এই চাই’। এই এসএমএসটি দেয়া হয় ১৬ ই মার্চ। ২২ শে মার্চ দেয়া একটি এসএমএস-এ সোনিয়া তৌফিককে বলছেন- ‘রুমে আস’। ২১ শে মার্চ সন্ধ্য ৬ টা ১৮ মিনিটে দেয়া একটি এসএমএসে সোনিয়া তৌফিকের কাছে জানতে চান-ঐ রুমে কি? আরেকটি এসএমএসে কোথায় তুমি। নো ইউ কাম ইন সাইড। এরআগে তৌফিক সোনিয়াকে একটি রুম নম্বর ২০৩ লিখে এসএমএস করে। ২৪ শে মার্চ এসএমএসে সোনিয়া তৌফিককে লিখেন- তুমি আস আমি বেড়িয়ে যাব। ২৬ শে মার্চ আরেকটি এসএমএসে সোনিয়া তোফিকের কাছে লিখেন-ভালোবাসা ভরা একটি কিস আমার কপালে।

SMS PIC_2 সোনিয়াকে তৌফিকের দেয়া এসএমএস গুলোতেও রয়েছে গভীর প্রেম-ভালোবাসা আর অভিসারের প্রমান। সোনিয়া যখন আরেকজনের স্ত্রী তখনই তৌফিক সোনিয়াকে সোনা বৌ ডাকতে শুরু করেন। তাকে পাঠানো একটি এসএমএসে তৌফিক লিখেন-‘ওহ মাই জান। তুমি যে কতো ভাল। আমি ছাড়া কেউ জানেনা,কেউ জানার দরকার নাই জান। আমার জান। আমার সোনা বৌ’। এই এসএমএসটি দেয়া হয় ১৬ ই মার্চ দুপুর সাড়ে ১২ টায়। ১৭ই মার্চ রাত ৮ টা ২৩ মিনিটে দেয়া আরেকটি এসএমএস-এ তৌফিক লিখেন- ‘আমার পাশে উপজেলা চেয়ারম্যান,হি নোজ ইউ। বলো এখন আমি কি করবো’। ১৪ ই মার্চ তৌফিক সোনয়িাকে লিখেন- ‘তোমার ভালোবাসা আমার চোখ খুলে দিয়েছে’। এদিনই আরেকটি এসএমএস-এ তৌফিক লিখেন- ‘জানু আমার,ওহ মাই জানু আই লাভ ইউ সো মাচ। সো মাচ জান আমার। এই এসএমএস এর প্রতিটি অক্ষর অন্তরের অন্তস্থল থেকে বেড়িয়ে এসেছে জান বুঝে নিস’। ১৫ ই মার্চে দেয়া একটি এসএমএসে-‘ইয়েস সুইট হার্ট আই নো ইট বেরি ওয়েল। রিমেম্বার নাও ইউ আর নট সনি ইউ আর তৌফিক। আই এম নট তৌফিক নাও আই এম সনি। সো ইউ এন্ড মি জাষ্ট ওয়ান পারসন। জান লাভ ইউ সো মাচ’। ১৮ই মার্চ তোফিক আরেকটি এসএমএসে লিখেছেন-‘আমার ভেতর-বাহির সব তোমার,সব কিছু সব। ২৬ শে মার্চ দেয়া এসএমএস- এ-‘আমার সনি,ইয়েস আমার সনি,আমার অস্তিত্ব আমার বিশ্বাস,আমার স্বপ্ন। ২৭ শে মার্চ দেয়া আরেকটি এসএমএস-এ ‘শুধু একবার বলে দেও আমি যে তোমার কতো যে প্রিয়। ভালোবাসি খুব বেশী’। ১৯ শে মার্চ -‘পৃথিবীর সব সত্যগুলোর একটি সত্য হলো তুমি আমার’। ২৬ শে মার্চ -‘একটু কিস এখনই’। আরেকটি এসএমএস-এ ‘আমার পাগলি আই অলসো লাভ টু ইউ জান,সো মাচ’। ২১ শে মার্চের একটি এসএমএস- ২০৩ লিখে দেয়া হয়। পরের মেসেজটিতে প্লিজ ইউ কাম আইটসাইড। ইউ কাম আউটসাইড। সোনিয়াকে দেয়া তৌফিকের ৫ ই মার্চের একটি এসএমএস-‘আমি জানি বিষন্ন সাগরে তুমি ডুবন্ত অবস্থায় আছ। আমি তোমাকে সেখান থেকে তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসা দিয়ে উঠিয়ে আনবো। তোকে ছাড়া আমার চলবেনা জান’। এদিনের আরেকটি এসএমএস-এ ‘আমি আরো পাগল হয়ে বদ্ধ উন্মদ হতে চাই তোর জন্যে। সবার সামনে বসে এসএমএস দিচ্ছি। সমস্যা নাই কেউ বুঝবেনা। না পার্টি অফিসে আছি’। ৫ ই মার্চের আরেকটি এসএমএস- ‘আমার কলিজার টুকরা’। ৭ ই মার্চ দেয়া এসএমএস-এ ‘আমি তোমার বুকের মাঝে’। এদিনের আরেকটি এসএমএস-এ ‘অবশ্যই তুমি জানো কেনো আমায় মিস করছো,আমার জান পাখিটা’। ১০ ই মার্চ -‘জান পাখিটা ছাড়া যে আমার কিছুই ভালো লাগেনা’। মার্চের ২০ তারিখ থেকে ২৯ তারিখ সোনিয়া ঘর থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পর্যন্ত সোনিয়া ও তৌফিক মোবাইল ফোনে দিনের বেশীর ভাগ সময়ই কথা বলেছেন।